বাঁকুড়া জেলার সেরা ৭টি পর্যটন গন্তব্য – ভ্রমণের দরকারি সব তথ্য

বাঁকুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান

বাঁকুড়া জেলার দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে বিষ্ণুপুর, জয়রামবাটী বা মুকুটমণিপুর সবার আগে মনে আসে। প্রাচীন যুগে বাঁকুড়া জেলা ছিল রাঢ় অঞ্চলের অধীনস্থ। বীর মল্লরাজ রঘুনাথের রাজত্বেই গড়ে উঠেছিল পৃথিবী বিখ্যাত লাল পোড়ামাটির সৃষ্টি, টেরাকোটা। এই জেলার সাংস্কৃতিক আইকন বলা যায় ঘোড়া। এই জেলার বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছরই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে তবে আজ বাঁকুড়া জেলার এইরকমই সাতটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রের সম্পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরা হলো।

বাঁকুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান সমুহের সেরা ৭টি কি কি?


১. জয়রামবাটি

জয়রামবাটি

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পবিত্র দর্শনীয় স্থান জয়রামবাটি । শ্রীশ্রীমা সারদা দেবীর জন্মস্থান হিসাবে জয়রামবাটি স্থানটি ঐতিহ্যমণ্ডিত। প্রতি বছরই এই স্থান দর্শনের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী আসেন। এখনও এই গ্রামে পা রাখলে একটা সামগ্রিক পরিচ্ছন্নতা আপনাকে এক পবিত্র স্পর্শ যেন মন প্রান জুড়ে থাকবে। পুরো জয়রামবাটি গ্রাম জুড়ে অনেকগুলি ছোট ছোট মন্দির রয়েছে, তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল মাকে উৎসর্গ করা শ্রী শ্রী মাতৃ মন্দির। প্রায় সারা বছর জয়রামবাটি গ্রামে যে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি হয় বেশিরভাগ দর্শককে গ্রামে আকর্ষণ করে এবং তাই এই উৎসব গুলি ক্রমে গ্রামের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

কিভাবে যাবেন জয়রামবাটি

  • বাসেঃ কলকাতা থেকে বিষ্ণপুর বাঁকুড়াগামী প্রায় সব বাসই জয়রামবাটির উপর দিয়ে যায়। কলকাতা থেকে জয়রামবাটি প্রায় চারঘন্টা সময় নেয়। জয়রামবাটি থেকে সোজা ফিরুন কলকাতা।
  • ট্রেনেঃ এলে আরামবাগে নেমে বাসে আধঘন্টার মত রাস্তা। যারা দক্ষিণবঙ্গ বা বাঁকুড়ার দিক থেকে আসবেন তারা বিষ্ণুপুর বা বর্ধমান হয়ে আসতে পারেন।

কোথায় থাকবেন জয়রামবাটিতে

  • থাকা: বেশিরভাগ পর্যটকই দিনের দিনই ফিরে যান। জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরেও থাকতে পারেন। ফোনঃ ০৩২১১-২৪৪২১৪
  • খাওয়া: খাবার হোটেল থাকলেও বেশির ভাগ পর্যটক জয়রামবাটিতে অন্নভোগ গ্রহণ করেন। এই প্রসাদও ভক্তদের খাছে বড়ই আনন্দের।

২. মুকুটমণিপুর

মুকুটমণিপুর
Picture credit : Eatcha – Own work, CC BY-SA 4.0 via wikimedia.org

মুকুটমণিপুর ড্যাম এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ হিসেবে এবং বাঁকুড়া জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসাবে পরিচিত। মুকুটমণিপুর নামটি “মুকুট” এর মতো পাহাড় এর জন্য বলা হয়। এই মাটির বাঁধ সবুজ পাহাড় দিয়ে ঘেরা। মুকুটমণিপুরের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য তাকে রাঢ়বঙ্গের রানি বলা হয়। জল, জঙ্গল আর পাহাড়ের অপূর্ব মিশ্রণ মুকুটমণিপুর পর্যটকেদের কাছে একটি অন্যতম বেড়ানোর জায়গা। এটি ফটোগ্রাফির জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য হিসাবেও বিবেচিত হয়। পরিবারের সঙ্গে বা প্রিয়জনের সঙ্গে ড্যামের জলে নৌকাবিহার করতে যেন ভুলবেন না। অম্বিকা মন্দির, মুসাফিরানা ভিউ পয়েন্ট, পোরেশনাথ শিব মন্দির, ডিয়ার পার্ক কংসাবতী বাঁধ মুকুটমণিপুরের কাছে কিছু মনোরম স্থান।

মুকুটমণিপুর কিভাবে যাবেন

  • ট্রেনেঃ বাঁকুড়া স্টেশনে এসে গাড়ি বা বাসে করে পৌঁছে যেতে পারবেন মুকুটমণিপুরে।
  • বাসেঃ দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস ধরেও সরাসরি কলকাতা থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়া যায়।

মুকুটমণিপুরে কোথায় থাকবেন

এখানে থাকার জন্য রয়েছে অজস্র হোটেল ও গেস্ট হাউস। সাধ্যমতো আপনি রুম ভাড়া পেয়ে যাবেন। খাবারও পেয়ে যাবেন হোটেল বা রিসর্টে থেকেই।

৩. জয়পুর বন

জয়পুর বন
Picture credit: telegraphindia.com

আপনি যদি নিরিবিলিতে দুই বা তিনদিনের ছুটি কাটাতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন বাঁকুড়া জেলার জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য সবুজ জঙ্গলে ঘেরা জয়পুর ফরেস্ট। শাল, সেগুন, পলাশ, কুসুম, মহুয়া, নিম প্রভৃতি গাছে জঙ্গল ভরে আছে। এই জঙ্গলে চিতল হরিণ ছাড়াও হাতি, বন্য শিয়াল, নেকড়ে, ময়ূর এবং অন্যান্য পাখিও বনে থাকে। এই জঙ্গলের মধ্যে মোবারকপুর এবং মাচানপুরে দুটি ওয়াচটাওয়ার আছে যেখান থেকে বোনের মধ্যে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়। এ-ছাড়াও জঙ্গলের ভিতরে দেখতে পারেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হওয়া একটি এরোড্রোম।

কিভাবে যাবেন জয়পুর বন

ট্রেনে করে কলকাতা থেকে বিষ্ণুপুর স্টেশন থেকে গাড়ি, টোটো বা অটোতে করে পৌঁছে যেতে পারবেন জয়পুর ফরেস্টে।

কোথায় থাকবেন জয়পুর বনে

  • থাকাঃ এখানে থাকার জন্য রয়েছে বনলতা ও বনফুল রিসর্ট। এখানে কটেজ বা এমনি রুম আপনার সাধ্যের মধ্যেই ভাড়া পেয়ে যাবেন।
  • খাওয়াঃ খাওয়াদাওয়া করতে পারেন এই রিসর্টেই। খাবার মান অত্যন্ত ভাল।

৪. শুশুনিয়া পাহাড়

শুশুনিয়া পাহাড়

শাল, মহুয়া, অর্জুন আর পলাশ-ঘেরা জঙ্গল আর পাহাড়-ঘেরা গ্রাম নিয়ে বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়। প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য শুশুনিয়া পাহাড় বিখ্যাত। স্থানীয় মতে এই পাহাড়টি দূর থেকে দেখলে অনেকটা শুশুকের মতন তাই এই পাহাড়ের নাম শুশুনিয়া পাহাড়। শুশুনিয়া পর্বতারোহন প্রেমীদের কাছে বাঁকুড়া জেলার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় স্থান ।

প্রায় 1500 ফুট উচ্চতায় শুশুনিয়া পাহাড়ের কিছু “রক ফেস” রক ক্লাইম্বিং বা পর্বতরোহনের প্রাথমিক শিক্ষার এক আদর্শ জায়গায় পরিনত করেছে। সারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিভিন্ন ক্লাব তাদের রক ক্লাইম্বিং, ক্যাম্পিং এবং ট্রেকিংয়ের জন্য পুরো শীতকাল জুড়ে এই শুশুনিয়া পাহাড়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালান।

এই পাহাড়েই অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম শিলালিপিটি। শুশুনিয়া পাহাড়ের নিচে ঝরনার মুখে একটি প্রাচীন এক পাথরের নরসিংহ মূর্তি দেখা যায়। সেই ঝরনার উৎস নাকি আজও অজানা। পাহাড়ের পাথর কেটে তৈরি করা নানান ধরনের শিল্পকলা নিদর্শন তৈরি করেন এখানকার গুণী শিল্পীরা।

শুশুনিয়া পাহাড় কিভাবে যাবেন

ট্রেনে করে এলে ছাতনা স্টেশনে নামলে সেখান থেকে টোটো-অটো বা গাড়িতে করে পৌঁছে যেতে পারবেন শুশুনিয়ায়।

শুশুনিয়া পাহাড়ে কোথায় থাকবেন

এখানে ইকো ট্যুরিজম লজের পাশাপাশি থাকার জন্য পেয়ে যাবেন একাধিক হোটেল। তা ছাড়াও পাহাড়ের নিচে আপনি টেন্টেও থাকতে পারেন

৫. বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুরকে পশ্চিমবঙ্গের মন্দির শহর বলা হয় তা একবার এখানে আসলেই বোঝা যায়। এখানকার প্রাচীন মন্দিরগুলি তাদের স্থাপত্য মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির ভাস্কর্য্য ইত্যাদি যেন গর্বের সাথে তাদের ঐতিহ্য বর্নন করছে। এ এক অদ্ভুত অনুভব। জানাযায় ১৭ শতকে বিষ্ণুপুর মল্ল রাজাদের রাজধানী ছিল। সেই সময়েই বিষ্ণুপুর তাঁর গৌরবের শিখরে উঠেছিল। বাংলায় পাথরের স্বল্পতার জন্য পোড়া মাটির ব্যবহার তাঁর বিকল্প হিসাবে উন্নতি সাধন করে। রাজা জগৎ মল্ল ও পরবর্তিতে তার বংশধরগন পোড়ামাটির তৈরি শিল্পে ব্যবহার করে অনেক মন্দির তৈরি করেছিলেন। ইতিহাসপ্রেমী পর্যটকদের কাছে বিষ্ণুপুর বাঁকুড়া জেলার আদর্শ দর্শনীয় স্থান ।

রাজা জগৎ মল্ল এবং তার বংশধরেরা পোড়ামাটির এবং পাথরের শিল্পের তৈরি অসংখ্য মন্দির তৈরি করেছিলেন। বিষ্ণুপুরের প্রধান আকর্ষণ যে মন্দিরগুলি যেমন রাধাগোবিন্দ মন্দির, রাসমঞ্চ, শ্যামরাই বা মদনমোহন মন্দির এই সমস্ত মন্দিরে গায়ে পোড়ামাটির শিল্পকর্মের স্থাপত্য কাঠামোর মধ্যে হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীর সমৃদ্ধ। তাছাড়া বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলি বাংলার মন্দির স্থাপত্য শৈলী অনুসরণ করে এবং এতে চালা এবং রত্ন মন্দির উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। সত্যই যদি বিষ্ণুপুরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি ভাল করে দেখতে হয় তবে উঠে বসুন এখানকার যেকোন একটি সাইকেল রিক্সায় আর বিভিন্ন সরু গলি দিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখুন।

আর একটা কথা বলতেই হয় যে, মন্দিরের যে কারুকাজের কথা বললাম, সেগুলির মতই এখানকার দক্ষ তাঁতিরা ঐ ধরনের সুন্দর কাজগুলি ভাল সিল্কের শাড়িতে ফুটিয়ে তোলেন। অর্থাৎ বালুচুরি শাড়ি। পশ্চিমবঙ্গের এই অদ্ভুত পুরানো শহরের মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম প্রধান মাধ্যম।

কিভাবে আসবেন বিষ্ণুপুরে

  • বাসঃ কলকাতা থেকে সরাসরি বাস আপনাকে বিষ্ণু পুর পৌছে দেবে। সরকারি বা বেসরকারি দুরকম বাসই আছে।
  • ট্রেনঃ হাওড়া থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস বা শিরোমনি এক্সপ্রেস এবন্দ সাঁতরাগাছি থেকে আরণ্যক বা রুপসী বাংলা এক্সপ্রেস ধরুন আর সোজা বিষ্ণুপুর পৌছে যান।

বিষ্ণুপুরে থাকার জায়গা

স্টেশনের কাছে বা শহরে থাকার বেশকিছু হোটেল আছে যেগুলি বেশ পরিচ্ছন্ন এবং সাশ্রয়ী।


বিষ্ণুপুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিষ্ণুপুর ভ্রমণ পোস্টটি পড়তে পারেন

৬. ঝিলিমিলি

ঝিলমিলি
Picture credit: sangbadpratidin.in

ঝিলিমিলি বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ৭০ কিমি দূরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটা ছোট্ট বনাঞ্চল। চাইলে এক বা দুই দিন থাকাও যেতে পারে। ঝিলিমিলি একেবারে বাঙ্কুড়া,পুরুলিয়া আর ঝাড়গ্রাম জেলার সিমান্তবর্তি অঞ্চলে অবস্থিত। জায়গাটি যেন একটি টিলার উপর আছে। ঘন সবুজ বনের মধ্যদিয়ে কংসাবতী নদী বয়ে চলেছে। মাঝেমাঝে গাছগুলি এত ঘন যে সুর্যের আলো নিচে পর্যন্ত পৌছায়না। এই সুন্দর জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে আপনার সময় কেটে যাবে। তবে আরও ভাল লাগবে বনের মধ্যে রয়েছে অসম্ভব সুন্দর তালবেড়িয়া ড্যাম – দেখতে ভুলবেন না।

একটা ছবির মত দৃশ্য যেন আপনার চোখের সামনে রয়েছে মনে হবে। এই জায়গাটা যেহেতু দলমা রেঞ্জের মধ্যেই পড়ে তাই হাতির দল আবশ্যই মাঝে মাঝে দেখাযায়। ঝিলিমিলিতে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে যেখান থেকে প্রধানত শীতকালে হাতিদের নেমে আসার দৃশ্য চাক্ষুস করা যেতে পারে। এরকম একটা জায়গায় শহুরে জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তির একটা আদর্শ জায়গা বটে।

ঝিলিমিলিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় অনুষ্ঠান হল বার্ষিক ‘টুসু’ উৎসব যা এই অঞ্চলের একটি প্রধান আকর্ষণও। ঝিলিমিলির অধিবাসিরা জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে টুসু পরব বা উৎসব উদযাপন করেন। ক্রমে ঝিলিমিলি বাঁকুড়া জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটক গন্তব্য হয়ে উঠছে।

কিভাবে যাবেন ঝিলিমিলি

ট্রেনে হাওড়া থেকে ঝাড়গ্রামে এসে সেখান থেকে ঝিলিমিলি পৌঁছে যেতে পারবেন।
অথবা বাঁকুড়া পর্যন্ত ট্রেনে এসে সেখান থেকেও বাসে ঝিলিমিলি পৌঁছে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন ঝিলিমিলিতে

  • থাকাঃ এখানে থাকার জন্য পেয়ে যাবেন রিমিল লজ। সাধারণ রুম বা চাইলে আপনি ট্রি হাউসে থাকতে পারবেন।
  • খাওয়াঃ খাওয়াদাওয়া করতে পারেন রিসর্টের নিজস্ব রেস্তরাঁতে । এঁদের খাবারের মান বেশ ভাল।

৭. বড়দি পাহাড়

বড়দি পাহাড়
Picture credit: abekshan.com

এই অফবিট জায়গাটি বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা ব্লকে অবস্থিত। পাহাড়-জঙ্গল-নদী এবং পাহাড়ের ওপর সুদৃশ্য থাকার জায়গাগুলোতে আপনি দু-বা তিনদিন ছুটি অনায়াসে কাটিয়ে আসতে পারেন। প্রকৃতিপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য এই বড়দি পাহাড়। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কংসাবতী নদীর উপস্থিতিতে টিলার সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আসলে কংসাবতী নদী পাহাড়ের কাছে একটি গিরিখাত তৈরি করেছে, যা এই জায়গাটিকে একটি স্বর্গিয় রূপ প্রদান করেছে। বড়দি পাহাড় গাছপালা এবং প্রাণীজগতের বৈচিত্র্যের একটি আবাসস্থল। তবে জায়গাটিকে আরও আকর্ষনিয় করে তুলেছে কিছুটা ইতিহাস। এই বড়দি পাহাড় দুর্জন সিং-এর স্মৃতির সাথে জড়িত, যিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এখনাকার সবচেয়ে বড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

বড়দি পাহাড় একটা দারুন পিকনিক স্পটও বটে। গাছের ছায়ায় কম্বলে শুয়ে খোলা নীল আকাশের নীচে আরাম করুন। পাখিদের কলতান, ঠাণ্ডা ও মৃদুমন্দ বাতাস সাথে মাটির একটা সুগন্ধ সব একসাথে আপনার মন ও শরীর একসাথে তরতাজা হবেই। আপনি অনুমান করতে পারবেন কেন বড়দি পাহাড় বাঁকুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান হিসাবে ক্রমে আরও উপরে উঠে আসছে ।

বনের ভিতরে রেলপথ দিয়ে হেঁটে দেখুন একটা দারুন অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। আপনি পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারেন যেখানে ভগবান শিবের একটি ছোট মন্দির রয়েছে। নদীর তীরে যান এবং সাঁতার কাটুন নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনার মনে এক অনাবিল আনন্দে ভরে উঠবে। সবুজ ঘাসের সুন্দর কার্পেট পাবেন। প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য এটির উপর খালি পায়ে দাঁড়ান এবং আপনি এটির উপর বসে আরাম করতে পারেন। জায়গাটাতে আরও অনেক কিছু আছে। শীত শুরু হলে এটি উদ্যোগ নিন।

বড়দি পাহাড় কিভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে ট্রেনে বাঁকুড়া স্টেশনে এসে পি মোড় পর্যন্ত বাসে এলে সেখান থেকে আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন বড়দি পাহাড়।

কোথায় থাকবেন বড়দি পাহাড়ে

  • থাকাঃ বড়দি ইকো রিসর্টে বুক করে আপনি এখানে থাকতে পারেন। রুম ভাড়া আপনার সাধ্যের মধ্যেই।
  • খাওয়াঃ বড়দি রিসর্টের নিজস্ব রেস্তরাঁয় আপনি আপনার পছন্দসই খাবার পেয়ে যাবেন। আর একটা কথা, বাঁকুড়ার বিখ্যাত পোস্তর বড়া অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।

Leave a Comment