হুগলী জেলার বিখ্যাত ১০টি দর্শনীয় স্থান

হুগলি জেলার দর্শনীয় স্থান

পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে খুবই আকর্ষনীয় জায়গা এই হুগলী জেলা। এর প্রতিটি জনপদই একেকটা ভিন্ন ধরনের ইতিহাস বহন করে। চুঁচুড়া এই জেলার সদর শহর। মনে করা হয় যে ‘হোগলা’ থেকে হুগলী নামটি এসেছে। কারন এক সময় গঙ্গার তীরবর্তি নিচু এলাকাতে প্রচুর ‘হোগলা’ পাওয়া যেত। বর্ধমানের দক্ষিণাংশকে বিচ্ছিন্ন করে ১৭৯৫ সালে ইংরেজরা প্রশাসনিক কারণে হুগলি জেলা তৈরি করে ছিল। হাওড়া তখনও হুগলি জেলারই অংশ ছিল।

হুগলী জেলার দর্শনীয় স্থান কি কি?


১. হংসেশ্বরী মন্দির

হংসেশ্বরী মন্দির

হুগলী জেলার দর্শনীয় স্থান হিসাবে সবার উল্লেখ করতে হয় বাঁশবেড়িয়ায় কাছে দুটি বিখ্যাত মন্দির হংসেশ্বরী ও অনন্ত বাসুদেব মন্দির। মন্দিরের স্থাপত্য বা গঠনশৈলীগত দিকথেকে হংসেশ্বরী মন্দির সাধারন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন বেশি করে। তবে পর্যটক বা গবেষক উভয়ের কাছেই এদুটি মন্দিরেরই গুরুত্ব অপরিসীম। হংসেশ্বরী মন্দিরের অনুরূপ মন্দির বাংলায় আর নেই। এই মন্দিরটির বেশ অনেকগুলি বিশেষত্ব আছে যা সাধারন ভ্রমণকারীদের চোখে পড়বেই যেমন –

  • এটি তন্ত্রমতে তৈরি, পাঁচতলা এই মন্দিরের গঠন মানব দেহের পাঁচটি নাড়ির ঈঙ্গিত করে, যেগুলি হল ইড়া, পিঙ্গলা, বজ্রাক্ষ, সুষুম্না ও চিত্রীনি।
  • ৬০ ফুট উঁচু এই মন্দিরের ১৩টি চুড়া বা মিনার রয়েছে যেগুলি নাফোটা পদ্মফুলের কুঁড়ির মত দেখতে।
  • দেবী হংসেশ্বরী এখানে মহাদেবের নাভি থেকে বেরিয়ে আসা বৃন্ত সহ পদ্মের উপর অধিষ্ঠাত্রি।
  • মন্দিরের নিচ থেকে উপর ১৪টি শিবলিঙ্গ অধিষ্ঠিত।

হংসেশ্বরী মন্দির ইতিহাস

মুঘল আমলের দুর্গ- নগর বংশবাটী যা বর্তমানে বাঁশবেড়িয়া নামে পরিচিত। হুগলী জেলার বাঁশবেড়িয়া রাজপরিবার দত্তরায়’দের আদি নিবাস ছিল বর্ধমানের পাটুলি’তে । রামেশ্বর রায় বাঁশবেড়িয়ার জমিদার থাকাকালীন গোটা বাংলা বর্গী ( মারাঠা ) আক্রমণে বিপর্যস্ত শ্মশানে পরিণত হয়। শোনা যায় মারাঠা শত্রুদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য রাজা রামেশ্বর একটি বাঁশবন পরিষ্কার করে এক মাইল জায়গাজুড়ে পরিখা বেষ্টিত এক দুর্গ বানিয়েছিলেন, যা থেকে এই অঞ্চলটির নাম হয় বাঁশবেড়িয়া। রামেশ্বর রায় বাঁশবেড়িয়ায় একটি টেরাকোটার কারুকার্য খচিত বিষ্ণু মন্দির নির্মাণ করান, যেটি অনন্ত বাসুদেব মন্দির নামে পরিচিত এবং হংসেশ্বরী মন্দিরের পূর্ব দিকে বর্তমানে রয়েছে। পরবর্তিকালে রাজা নৃসিংহদেব ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে হংসেশ্বরী কালীমন্দিরের নির্মাণ শুরু করেন এবং তার মৃত্যুর পর ১৮১৪ খ্রিষ্টাব্দে তার বিধবা পত্নী রাণী শঙ্করী মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করেন।

কিভাবে যাবেন হংসেশ্বরী মন্দির

  • ট্রেনে – হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনের ত্রেন ধরুন আর বাঁশবেড়িয়া স্টেশন নেমে পড়ুন। স্টেশন থেকে হংসেশ্বরী মন্দির পর্যন্ত রিকশা দিয়ে প্রায় পাঁচ মিনিটের পথ। আর যদি হাওড়া থেকে মেইন লাইনের লোকাল ট্রেনে ব্যান্ডেল স্টেশন নেমে পড়ুন – ওখান ঠেকে থেকে হংসেশ্বরী মন্দির পর্যন্ত অটো বা স্থানীয় পরিবহনের মাধ্যমে প্রায় ২০ মিনিটের পথ।
  • সড়ক পথে – গাড়িতে গেলে দক্ষিনেশ্বর থেকে দিল্লি রোদ হয়ে বাঁশবেড়িয়ায় । মোট ঘন্টা দে ড়েকের মধ্যে পইছে যাবেন।

২. ব্যান্ডেল চার্চ

ব্যান্ডেল চার্চ

ব্যান্ডেল চার্চ নামটা বারবার শোনা যায় ইংরেজি বছরের শেষ দিকেই। বড়দিন বা নতুন ইংরাজী বছরের ছুটির মরশুমে। মানুষজন এই সময়টায় পছন্দসই নানা জায়গায় ঘুরতে যান। তার মধ্যে হুগলী জেলার অন্যতম দর্শনিয় স্থান হল এই ব্যান্ডেল চার্চ বা ব্যান্ডেল গির্জা। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম এই গির্জার পোষাকি নাম ‘দি ব্যাসিলিকা অফ দি হোলি-রোসারি, ব্যান্ডেল‘। গির্জাটি মাতা মেরির প্রতি উৎসর্গিত । ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে হুগলী নদীর তীরে তৈরি হয়েছিল একটি কাঠের গির্জা ‘নোসা সেনহোরা দো রোজারিও’ সেটিই বর্তমান কালের বান্ডেল চার্চ ।

ব্যান্ডেল চার্চের ইতিহাস

১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগিজ অ্যাডমিরাল সাম্পায়ো যুদ্ধজাহাজ ও সেনা নিয়ে শের শাহকে আক্রমণ করেছিল। সেই যুদ্ধে পর্তুগিজরা জয়ী হয়েছিল এবং তারা হুগলী জেলার গঙ্গার পাশে বাণিজ্যকুঠি গড়ে তুলতে পেরেছিল। পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচারও স্থানিয় জনগনের ধর্মান্তরকরন জোরকদমে শুরু হয়। শাহজাহানের সঙ্গে পর্তুগীজদের সম্পর্ক ক্রমাবনতির পথে এগোতে থাকে .

সম্রাট শাহজাহান পর্তুগিজদের পরাজিত করে ব্যান্ডেল গীর্জাটিকে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত করে দেয়। শতাধিক পর্তুগীজ সহ গীর্জার প্রধান ফাদারকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লি। সেখানে জনগণের সামনে উন্মত্ত হাতির পায়ের কাছে তাঁকে নিক্ষেপ করা হয়। জনশ্রুতি এই যে, হাতিটি পুরোহিতের সামনে এসে তাকে না পিষে পিঠে তুলে নিয়ে শাহজাহানের কাছে ক্ষমা ভিক্ষার ভঙ্গিতে মাথা নত করে দাঁড়ায়। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক শাহজাহান পর্তুগীজদের সাথে সন্ধি করেন। এই গির্জার পুনরায় নির্মানের জন্য অর্থ ও নিস্কর জমি প্রদান করেন।

স্থানীয় বিশ্বাস মতে মমতাময়ী মাতা মেরি সমস্ত মনস্কামনা পূরণ করেন। স্থানিয় জনগনের মধ্যেও এই চার্চকে ঘিরে একটি রীতি চালু ছিল বা এখনও দেখা যায় মানুষ তার প্রিয়জনের দৈর্ঘ্যের সমান মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করে থাকেন, প্রিয়জনের আরোগ্য কামনায়। বড়দিনের প্রাক্কালে নতুন সাজে সেজে ওঠে গীর্জা-প্রাঙ্গণ।

বাংলা শব্দ ‘বন্দর’এর অপভ্রংশ ছাড়াও ব্যান্ডেল নামকরণের আরেকটি গল্প আছে। সেটি মাতা মেরির মহিমা গাথাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। এর সাথে জড়িয়ে আছে এক বণিক ও তার মাস্তুলের গল্প। পর্তুগীজ ভাষায় সেই মাস্তুলটিকে বলা হয়, ‘ম্যাস্টো দে ব্যান্দেইরা’। যে মাস্তুলটি কিছু কাল আগেও এই চার্চের চুড়ায় শোভা পেত তবে বর্তমানে সেটি এই গির্জাতেই সংরক্ষিত আছে।

কিভাবে যাবেন ব্যান্ডেল চার্চ

হাওড়া অথবা শিয়ালদা থেকে ট্রেন চেপে ব্যান্ডেলে যাওয়া যায়। সেখান থেকে রিক্সা, অক্টোরিকশা অথবা হেঁটেই যাওয়া যায় ২ কিলোমিটার দূরে ব্যান্ডেল চার্চে।

৩. হুগলী ইমামবাড়া

হুগলী ইমামবাড়া

হুগলি জেলার অন্যতম দর্শনিয় স্থান এই ইমামবাড়া। এই দু’তলা বাড়িতে অনেক কৃত্রিম ঝর্না, জলাশয় ও একটি ত্রিভুজাকৃতি অঙ্গন রয়েছে। তবে ইমামবাড়ার প্রধান আকর্ষণ হল এর ৮৫ মিটার উঁচু দুটি মিনার বা স্তম্ভ। স্তম্ভ দুটির একটি পুরুষ ও একটি মহিলাদের ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত। সব চয়ে উঁচু তলায় একটি ঘড়ি রয়েছে। ঘড়ির যন্ত্রপাতি ও ঘণ্টা আছে নিচের তলাগুলিতে। যেখান থেকে প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর এক বার করে আপনার কানে পৌঁছাবে ইমামবাড়ার মিনারে থাকা মস্ত বড় ঘড়ির সেই ঘণ্টাধ্বনি। আর প্রতি ঘণ্টায় বাজে একটু বেশি জোরে।

সেই ১৮৪১ সাল থেকে ওই ঘড়ির ঘণ্টা বেজে চলেছে এক ভাবে। লন্ডন শহরে গিয়ে বিগ বেন দেখার সৌভাগ্য যাঁদের হয়নি, তাঁরা আসতে পারেন হুগলী জেলার এই ইমামবাড়ায়। তফাত শুধু ব্রিটিশ স্থাপত্যের বদলে ইসলামি শিল্পকলার স্থাপত্যে, তাছাড়া ‘বিগ বেন’ এর সেই একই নির্মাতার নির্মিত দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘড়ি যেটি আজ সচল।

হুগলী ইমামবাড়ার ইতিহাস

আক্ষরিক অর্থে ইমামবাড়া কথাটির অর্থ ইমামদের থাকার জায়গা। কিন্তু ভারতে এই শব্দে বেশ বড় কোন হলঘরকেই বোঝায়। শিয়াপন্থী মুসলিম তীর্থ হুগলী জেলার এই ইমামবাড়া। শিয়া মুসলিম ধর্মাবলম্বিগন মহরম উদ্‌যাপনের জন্য এটি তৈরি করেছিল। ২২ বিঘা জমি জুড়ে গঙ্গার তীরে নির্মিত হুগলির ইমামবাড়া। আজও মহরমের উৎসব হয় এখানে। বর্ণাঢ্য মিছিল বেরোয়। প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়।

এই ইমামবাড়া প্রথম কবে স্থাপিত হয় তা সঠিক প্রমান না থাকলেও বর্তমান স্থাপত্যটির স্থপতি ছিলেন গণিতজ্ঞ সৈয়দ কেরামত আলি। এই ইমামবাড়ার নকশা তিনিই করেছিলেন। হাজি মহম্মদ মহসিন, যাঁকে শুধু হুগলি নয়, দূর-দূরান্তের মানুষও দানবীর বলেই জানেন। মহসিনের মৃত্যুর সময়েই জীর্ণ হয়ে পড়েছিল এই ইমামবাড়া। মহসিন এস্টেটের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ কেরামত আলি নতুন করে ওই ভগ্নপ্রায় ইমামবাড়া তৈরির পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নজরগাহ হুসেন ও তাজিয়াঘর মিলিয়ে এই বিশাল সৌধ তৈরি করেন। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ২০ বছর। খরচ হয়েছিল পৌনে ৩ লক্ষ টাকা।

কিভাবে যাবেন হুগলী ইমামবাড়া

হাওড়া থেকে ট্রেনে হুগলি স্টেশন, সেখান থেকে রিকশায় ইমামবাড়া। কিংবা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নৈহাটি হয়ে গঙ্গা পেরিয়ে হুগলি ঘাট স্টেশন। সেখান থেকে রিক্সা বা হাঁটাপথে ইমামবাড়া।

৪. তারকেশ্বর মন্দির

তারকেশ্বর মন্দির
Picture credit: templeduniya.com

হুগলী জেলার তারকেশ্বর হল বাংলার শৈব তীর্থস্থানগুলোর অন্যতম। সারাবছরই এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। শিবরাত্রি, চৈত্র সংক্রান্তি, গাজন উৎসব, প্রত্যেকটি সোমবার এবং শ্রাবণ মাসের প্রত্যেকটি দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য ভক্তরা তারকেশ্বর শিব মন্দিরে ভগবান শিবের মাথায় জল ঢেলে যান। এখানে ভগবান শিব বা তারকনাথের মন্দিরটি একটি আটচালা মন্দির। বর্তমানে মন্দিরটিকে যে ভাবে আমরা দেখে আসছি, তা মল্লরাজাদেরই তৈরি। মন্দিরের উল্টো দিকেই রয়েছে নাটমন্দির। যেখানে হাজারে হাজারে মানুষ বসে তাদের মনের কথা বাবাকে জানান। মূল মন্দিরের বা দিকে রয়েছে একটি পুকুর। সকলে দুধপুকুর বলে চেনে। সেই দুধপুকুরকে নিয়েও প্রচলিত রয়েছে নানা লোককথা ও বিশ্বাস।

তারকেশ্বর মন্দিরের ইতিহাস

কথিত আছে, তারকেশ্বর মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিষ্ণু দাস নামে উত্তরপ্রদেশের শিবভক্ত এক বাসিন্দা। তিনি বাংলার এই হুগলী জেলায় এসে বসবাস শুরু করেন। বিষ্ণুদাসের ভাই দেখেছিলেন স্থানীয় একটি জঙ্গলে একটি কালো পাথরের ওপর গরুরা নিয়মিত দুধ দান করে আসে। এই অদ্ভুত দৃশ্য দেখার পরেই তিনি তার দাদা বিষ্ণুদাসকে জানান পুরো ব্যাপারটা। এর পরই নাকি স্বপ্নাদেশ পান বিষ্ণু দাস। তিনি ওই পাথরটিকে শিবলিঙ্গ রূপে কল্পনা করে নিয়ে পুজো করা শুরু করেন। ক্রমশ এই কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে তারকেশ্বর মন্দিরে। তবে বেশ অনেকবারই এই শিব মন্দিরকে মেরামত আর পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। ১৭২৯ সালে মন্দিরটিকে মল্ল রাজারা নতুন করে সংস্কার করেন।

দ্বিতীয় একটি মতে, বিষ্ণু দাস নন, এই মন্দিরের শিবলিঙ্গের প্রথম খোঁজ পান মুকুন্দ ঘোষ। তাঁর গোরু এখানে দুধ দিয়ে চলে যেত। কারণ, খুঁজতে গিয়ে তিনি শিবলিঙ্গটির খোঁজ পান। পাশাপাশি, কথিত আছে ১৭২৯ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে জঙ্গল কেটে মন্দিরটি তৈরি করান মল্ল রাজা ভারামল্ল ।

কিভাবে যাবেন তারকেশ্বর

সবথেকে সহজ উপায় হল হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকাল ট্রেন ধরে এক্কেবারে লাস্ট স্টেশনে নেমে পড়ুন। তারপর হেঁটে বা রিক্সায় চলে আসুন মন্দির প্রাঙ্গনে।

৫. চন্দননগর মিউজিয়াম

চন্দননগর মিউজিয়াম

চন্দননগর ডুপ্লে মিউজিয়াম নানা দুর্মুল্য ও দুষ্প্রাপ্য দলিল দস্তাবেজ ইত্যাদির আকর। হুগলী জেলার চন্দননগর একসময় ফরাসি উপনিবেশ ছিল আর ভারতের স্বাধীনতার আরও তিন বছর পর ফরাসিদের আগল মুক্ত হয়েছিল। এখনও সেখানে রয়েছে ফরাসিদের বই, শিল্পকলা । তবে সেই চন্দননগরেই অবহেলায় পড়ে রয়েছে ফরাসিদের ঐতিহাসিক ডুপ্লে মিউজিয়াম। এই চন্দননগরে ফরাসীরা মোগল বাদশার কাছথেকে ৪০,০০০ ম্যদ্রার বিনিময়ে ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে কুঠি স্থাপন করেন। পরে গঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে মনোরম প্রাসাদের ফরাসি উদ্যানবাটি তৈরি করা হয়। তৎকালীনফরাসি গভর্নর মশিয়ে ডুপ্লে – এর বাসগৃহ ছিল এই বাড়িটি (বর্তমানে ডুপ্লে মিউজিয়াম) ।

চন্দননগরের ইতিহাস

চন্দননগরের ইতিহাস খুবই প্রাচীন। ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে ফ্যান ডেন ব্রোকের মানচিত্রে প্রথম চন্দননগরের নাম ও অবস্থানের উল্লেখ্য পাওয়া যায়। ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে হ্যামিল্টন সাহেব এই জনপদকে ‘চরোনগর’ বলে উল্লেখ করেন। এমনকি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাউদ্দৌলার আমলেও চন্দননগরের উল্লেখ রয়েছে। সেই সময় এই জায়গার নাম ছিল ফরাসিডাঙা।

চন্দননগর ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম কেন্দ্র বিন্দু। চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেছেন বিপ্লবী কানাইলালের মতন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। স্বাধীনতা সংগ্রামের নানান ইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে এই মিউজিয়ামটিতে।

৬. কামারপুকুর

কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম

হুগলী জেলার কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পূণ্য জন্মভূমি। কামারপুকুর সপ্তাশেষের ছোট্ট বেড়ানোর জন্য খুব সুন্দর গন্তব্য। কামারপুকুরে পাকা ঘরবাড়ি, পিচরাস্তা, শহুরে দোকান বাজার থাকলেও গ্রামীণতা কামারপুকুরের মজ্জায় এখনও। ফলে পাবেন গ্রামের স্বাদ। আর যে জন্য যাওয়া। আধ্যাত্মিক নবজাগরণের রূপকার ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মভিটে হুগলী জেলার এই কামারপুকুরে। সেই জন্মভিটে ঘিরে এবং তখনকার কাঁচাবাড়ি ও খড়ের চাল অক্ষত রেখে গড়ে উঠেছে বেলড় মঠের অধীনে কামারপুকুর শাখার রামকৃষ্ণ মঠ।

কামারপুকুরে অন্যান্য দ্রষ্টব্য

কামারপুকুরে বিশেষ দ্রষ্টব্য এই মঠের চৌহদ্দির মধ্যে ঠাকুরের বাসভবন, আমগাছ, জন্মস্থানের উপর নির্মিত মন্দির দেখা। মন্দিরে রয়েছে ঠাকুরের শ্বেতপাথরের মূর্তি। জন্মস্থানের পশ্চিমে রয়েছে কুলদেবতা রঘুবীরের মন্দির। মন্দিরে রঘুবীর শিলা, রামেশ্বর শিবলিঙ্গ ও শীতলার ঘট রয়েছে। নিত্যপূজা হয় এই মন্দিরে। ঠাকুরের ঘরের দক্ষিণ দিকে রয়েছে নাটমন্দির।

মঠ থেকে বেরিয়ে এসে দেখুন হালদারপুকুর, লাহাবাবুদের পাঠশালা, চিনু শাঁখারির ঘর, ভিক্ষামাতা ধনী কামরানীর ঘর প্রভৃতি। চাইলে রিক্সা করতে পারেন, নইলে মঠের গেটে অপেক্ষারত গাইডদের পঞ্চাশ একশ টাকা দিয়ে পায়ে পায়ে ঘুরে নিতে পারেন।

কিভাবে যাবেন কামারপুকুর

কোলকাতা থেকে কামারপুকুর যাওয়ার সরাসরি কোন রেল যোগাযোগ নেই। হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে আপনাকে তারকেশ্বর নেমে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে কামারপুকুর যেতে হবে। সবচেয়ে ভাল নিজে গাড়ি নিয়ে গেলে। তবে যেভাবেই যাবেন প্রায় ঘন্টা তিনেক সময় লাগবে।

কোথায় থাকবেন কামারপুকুরে

কামারপুকুরে আপনার বাজেটের ভিতরে হোটেল পেয়ে যাবেন। তাই থাকা খাওয়ার কোনও চিন্তা নেই। তবে চাইলে সেই দিনেই ঘুরে চলে আসা যায়।

৭. চুঁচুড়া ডাচ গোরস্থান

চুঁচুড়া ডাচ গোরস্থান

চুঁচুড়ায় ডাচ বা ওলন্দাজদের গোরস্থান হল কলকাতার পার্কস্ট্রিট সিমেট্রির মতই একটি গুরুত্বপুর্ন গোরোস্থান। এই গোরোস্থানটি চুঁচুড়ার ইতিহাসের একটি প্রামান্য নিদর্শন। ঊনবিংশ শতকে হুগলী জেলার চুঁচুড়ায় বসবাসকারী ওলন্দাজরা এই সমাধি ক্ষেত্র তৈরি করেন। এখানে অবস্থিত সবথেকে পুরাতন সমাধিটির মধ্যে একটি হল স্যার কর্নওয়ালিস জং-এর সমাধি। ওলন্দাজদের হাত থেকে যখন ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় ইংরেজদের হাতে, তখন শেষ ওলন্দাজ গভর্নর ছিলেন ড্যানিয়েল অস্থানি। ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা তুলে দিয়ে শেষ জীবনে এখানেই বসবাস করেন তিনি। ১৮৪০ সালে তার মৃত্যু হয়। তাঁরও সমাধি রয়েছে এখানে। লেখা আছে সে কালের গভর্নের জীবন সম্পর্কে নানা তথ্য। পরবর্তীতে হুগলী জেলার চুঁচুড়ার এই সমাধি ক্ষেত্রটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমাধি হিসাবে ঘোষিত হয়।

কিভাবে যাবেন চুঁচুড়ায়

  • হাওড়া থেকে মেন লাইনের বান্ডেল বা বর্ধমান লোকাল ধরে নিন আর সোজা চুচুড়া স্টেশনে নামুন।
  • তারপর আরও নির্দিষ্ট ভাবে বললে – চুঁচুড়ার ফুলপুকুর রোড এবং জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষ সরণির সংযোগস্থলে গেলেই এই গোরস্থানটির খোঁজ মিলবে। এই গোরস্থানটি গুস্তাভাস দুর্গের কাছে প্রায় ৭৪০০ বর্গ-কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে।

আর কি কি দর্শনিয় চুঁচুড়ায়

চুঁচুড়ায় ওলন্দাজদের বেশ কিছু শিল্পের নিদর্শন চোখে পড়ে। চুঁচুড়ার ডাচ গির্জা, সুসান্না আন্না মারিয়ার সমাধি, বর্ধমানের ডিভিশন কমিশনারের বাংলো অন্যতম। চুঁচুড়ায় গেলে এই স্থানগুলিতেও এক বার অবশ্যই দেখবেন ।

৮. আঁটপুর রাধাকান্ত জিউ মন্দির

আঁটপুর রাধাকান্ত জিউ মন্দির

আঁটপুরের রাধাকান্ত জিউয়ের এই মন্দিরটি‌‌ আসলে একটি বৈষ্ণব মন্দির। এটি ইতিহাস প্রেমিদের কাছে হুগলী জেলার দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৭০৮ খ্রিষ্টাব্দে বর্ধমানের রাজার দেওয়ান থাকাকালীন কৃষ্ণরাম মিত্র সেই সময়ে এক লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। পুরো মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল গঙ্গাজল ও গঙ্গামাটি দিয়ে। এই মন্দিরের ভিতরে রয়েছে একশো আটটি পদ্মফুলের কাজ। উপরে রয়েছে রামায়ণ আর মহাভারতের বিভিন্ন চিত্র। আর বাইরে রয়েছে বুলন্দ দরওয়াজা, রাজস্থানের মিনিয়েচার, মিশরের ফেরাও, জব চার্ণকদের ছবিও। এই টেরাকোটার কাজের অপরূপ শিল্প দেখতেই হয়তো শুধু রাজ্যের নয়, বিভিন্ন দেশ থেকেও পর্যটকরা ছুটে আসেন হুগলী জেলার আঁটপুরে।

বিবেকানন্দ শিকাগো বক্তৃতার আগে এই মন্দির দর্শন করে গিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। আঁটপুরের এই বৈষ্ণব মন্দিরটি ব্যবলনীয়, মিশরীয় ও সুমেরীয় সভ্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আর পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র আঁটপুরের এই বৈষ্ণব মন্দিরেই কেবলমাত্র দুর্গা ও কালীর পুজো হয়। আর যা কি না চলে আসছে ৩৩৮ বছর ধরে!

কী ভাবে যাবেন আঁটপুর

হাওড়া থেকে তারকেশ্বর, গোঘাট অথবা আরামবাগ লোকালে চেপে এক ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন হরিপাল। সেখান থেকে ম্যাজিক গাড়িতে চড়ে পৌনে একঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যান আঁটপুর। সবুজ শস্য ক্ষেতের বুক চিরে গ্রামের পাকা রাস্তা। মন ভরে যাবে তখনই।

আঁটপুরের রাধাকান্ত জিউ মন্দিরের পোড়ামাটির কাজ যদি ভাল লেগে থাকে তবে একবার বিষ্ণুপুর মন্দিরগুলি সম্পর্কে আবশ্যই দেখুন।

৯. মাহেশের রথ

মাহেশের রথ

হুগলী জেলার সেরা দর্শনীয় স্থান হিসাবে বলা যায় মাহেশের রথের মেলার কথা, যার সবথেকে উজ্জ্বল বর্ণনা রয়েছে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাধারানী’ উপন্যাসে। পুরীর পর পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রথযাত্রা এই হুগলী জেলার শ্রীরামপুরের মাহেশে। প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ লোক আসেন শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা চাক্ষুষ করতে এই মাহেশে।

কথিত চতুর্দশ শতাব্দীতে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক ব্যক্তি পুরীতে তীর্থ করতে যান। তাঁর ইচ্ছে ছিল জগন্নাথদেবকে ভোগ খাওয়ানোর। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষ তাতে বাঁধা দেন। মনের দুঃখে ধ্রুবানন্দ অনশন করে নিজের প্রাণ বিসর্জন দেবেন বলে ঠিক করেন। অনশনের তৃতীয় দিনে ধ্রুবানন্দ স্বপ্নাদেশ পান বাংলাতে ফিরে গিয়ে হুগলী নদীর ধারে মাহেশ বলে একটা জায়গায় জগন্নাথ মন্দির স্থাপন করার। স্বপ্নাদেশ মত বহুদিন অপেক্ষার পর একদিন ভাগীরথীর তীরে ভেসে এলো এক নিম কাঠ। সেই থেকে মাহেশে জগন্নাথ মন্দির।

মাহেশের রথের ইতিহাস

মাহেশের রথের একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। যতদূর জানা যায় ১৪৯৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ হুগলী জেলার বৈদ্যবাটির এক ভক্ত মন্দিরের রথ দান করেছিলেন। তখন মাহেশ থেকে দোলতলা পর্যন্ত রথযাত্রা হত বলে জানা যায়। বর্তমানে স্নানপিঁড়ি মাঠ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মাসির বাড়ি পর্যন্ত রথ টানা হয়।

পরবর্তিকালে ১৭৯৭ সালে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের শিষ্য বলরাম বসুর দাদা কৃষ্ণ রাম বসু একটি রথ দান করেছিলেন। সেই রথ অনেক অংশে ভেঙেচুরে গেলে কৃষ্ণ রামের পুত্র গুরুপ্রসাদ পরবর্তী বছরে আরো সুন্দর করে নয় চুড়া বিশিষ্ট নতুন রথ বানিয়ে দেন। ১৮৮৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হুগলির দেওয়ান কৃষ্ণচন্দ্র বসু নতুন রথ নির্মাণ করিয়ে দেন। তখন থেকে বর্তমানেও সেই রথটি আমরা দেখতে পাই। চার তলা বিশিষ্ট এই রথটি সম্পূর্ণ লোহার কাঠামোর উপর কাঠ দিয়ে তৈরি। ৫০ ফুট উঁচু ও বারো চাকা বিশিষ্ট এই রথের সামনে তামার তৈরি দুটি ঘোড়া জুড়ে দেওয়া হয়। রথের চার তলায় দেবতাদের বিগ্রহ বসানো হয়।

১০. শ্রীরামপুর রাজবাড়ী

শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো

হুগলী জেলার শ্রীরামপুরের খ্যাতির একটি দিক হলো কেরি সাহেবের ছাপাখানা এবং আরেকটি দিক রাজবাড়ী বা গোস্বামী বাড়ির ইতিহাস। এই গোস্বামী পরিবারে খ্যাতি ও ক্ষমতার শিখরে উঠে ছিলেন ‘রাজা কিশোরীলাল গোস্বামী’। এই গোস্বামী পরিবারের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে একটি বিখ্যাত হলো দুর্গাপুজো। তাঁদের পুর্বপুরুষ শ্রী রামগোবিন্দ গোস্বামী এই পুজো আরম্ভ করেন। শোনাযায় অত্যন্ত জাঁকজমকপুর্ন হত। সেযুগে দুর্গা পুজোর সময় যে সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হত, সেই আসরে বহু বিখ্যাত গায়ক গান গেয়েছেন বিখ্যাত ভোলা ময়রা, আন্টনি ফিরিঙ্গী ইত্যাদি দিকপাল শিল্পীরা।

শ্রীরামপুর রাজবাড়ীর ইতিহাস

শ্রীরামপুর রাজবাড়ি

শ্রীরামপুর রাজবাড়ির গোস্বামী পরিবারটির শ্রীরামপুরে আগমন ও বসবাসের সূত্রপাত শেওড়াফুলি রাজের হাত ধরেই। হুগলী জেলারই শেওড়াফুলি রাজপরিবারের রাজা রাজচন্দ্র রায় ১৭৫২-৫৩ সাল নাগাদ শেওড়াফুলির পাশেই শ্রীপুর গ্রামে একটি শ্রীরামচন্দ্রের মন্দির নির্মাণ করেন। শ্রী রামচন্দ্র জীউর এই মন্দিরটির সূত্রেই পরে শ্রীপুর, গোপীনাথপুর এবং মোহনপুর গ্রাম তিনটি সংযুক্ত করে গোটা জায়গাটির নাম দেওয়া হয় শ্রীরামপুর। মূল বসতবাড়ির অনুকরণে গোস্বামী বাড়ীর প্রাসাদ সংলগ্ন ঠাকুরদালানে রঘুরাম চালু করেন দুর্গাপুজো আনুমানিক ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে।

হুগলী জেলার জানা অজানা কিছু তথ্য

হুগলি জেলার মনীষীদের নাম

রাজা রামমোহন রায়, শ্রীরামকৃষ্ণ, হাজী মোহাম্মাদ মহসিন, আশাপুর্না দেবী, প্রেমেন্দ্র মিত্র, অতুল্য ঘোষ, ব্রজেন্দ্রনাথ দে, দ্বিজা মাধব, পেয়ারী চরণ সরকার….

হুগলি জেলার মন্দির

আনন্দভৈরবী মন্দির – বলাগড়, অনন্ত বাসুদেব মন্দির – বাঁশবেড়িয়া, বৃন্দাবনচন্দ্র মঠ – গুপ্তিপাড়া, দুর্গা মন্দির – দেওয়ানগঞ্জ ….

শ্রীরামপুরের দর্শনীয় স্থান

হেনরি মার্টিন প্যাগোডা, শ্রীরামপুর কলেজ, শ্রীরামপুর রাজবাড়ী, ড্যানিশ গোরোস্থান, সেন্ট ওলাভ চার্চ, ইম্যাকুলেট কনসেপ্ট চার্চ।

হুগলি জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

শ্রীরামপুরকে অষ্টাদশ শতকে, ড্যানিশরা ‘ফ্রেডেরিকনগর’ বলে অভিহিত করত। ১৭৯৫ সালে ব্রিটিশরা শাসন কার্যে সুবিধার জন্য বর্ধমান জেলার দক্ষিণাংশ কেটে হুগলী জেলার সৃষ্টি করে।

হুগলি জেলার নদী

এই জেলার প্রধান হল ‘হুগলী নদী’। এটি আবার নবদ্বীপের কাছে ভাগীরথী ও জলঙ্গি নদীর জলে পুষ্ট হয়।

Leave a Comment