রাঁচি ভ্রমণ, আমার মতে, পুরো ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মধ্যে, ভ্রমনের জন্য সেরা জায়গা। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে অবস্থিত ঝাড়খণ্ডের রাজধানী সুন্দরী রাঁচি সবাইকে স্বাগত জানায়। “ঝর্নার শহর” হিসাবে পরিচিত রাঁচি, তার আশেপাশে অসংখ্য জলপ্রপাত এবং তাদের বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে আপনাকে রোমাঞ্চিত করবেই। ব্রিটিশ আমলে একটি হিল স্টেশন হিসাবে পরিচিত ছিল এটি। এই শহরের পাহাড়ি পরিবেশ এবং ঘন জঙ্গল একদিকে যেমন মনকে এক অনাবিল আনন্দে ভরিয়ে দেয় তেমনি আবার যারা এডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমণকারী তাঁদেরও দারুন কাটবে সময়। কলকাতা থেকে সপ্তাহান্তে ঘুরতে যাওয়ার এক আদর্শ ঠিকানা।
কিভাবে পৌঁছাবেন রাঁচি ?
রাঁচি ভ্রমণ বেশ সোজা বা সহজ কলকাতা থেকে বিমানে গেলে তো রোজই ডিরেক্ট ফ্লাইট রয়েছে। আপনি নামবেন বিরসা মুন্ডা বিমানবন্দরে, যা কিনা শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র 7 কিমি দূরে অবস্থিত। এছাড়া হাওড়া থেকে শতাব্দি বা রাঁচি-হাতিয়া এক্সপ্রেস রয়েছে। এই হাতিয়া রেলওয়ে স্টেশনটি রাঁচির রেল হাব হিসাবে কাজ করে। এখানকার পরিবহণ কর্পোরেশন পরিচালিত বাসের বেশ ভাল নেটওয়ার্ক রয়েছে এই শহরকে ঘিরে। রাঁচির কাছাকাছি এলাকাগুলে ঘুরে দেখার পক্ষে প্রাইভেট গাড়ি বেশ সহজলভ্য, তবে আপনাকে বার্গেন করতে হবে একটু ।
কি কি দেখবেন রাঁচিতে – Ranchi tourist places
রাঁচি শহরকে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিভিন্ন নামে, যেমন “ঝর্নার শহর” বা “ছোটনাগপুরের রানী” নামে ডাকা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই রাঁচির দর্শনীয় স্থান আসলে সমগ্র শহর ও আশেপাশে সবুজ বন, নির্মল হ্রদ, পাহাড়, ঝর্না ইত্যাদিতে ছড়িয়ে রয়েছে। রাঁচিতে সবাইকে অফার করার মতো কিছু না কিছু অবশ্যই আছে। প্রতিটি ঋতুই নতুন ভাবে আপনাকে মুগ্ধ করবে। নিচে কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের কথা বলা হল। আপনি নিরিবিলি পছন্দ করুন বা অ্যাডভেঞ্চার, রাঁচি ভ্রমন করার জন্য সারা বছরই আপনাকে আমন্ত্রন করে।
1. হুড্রু বা হুন্ড্রু ফলস
রাঁচিতে আপনার আনন্দময় এবং বেশ একটু এডভেঞ্চার পুর্ন যাত্রা শুরু হোক এই হুড্রু জলপ্রপাত দিয়ে। রাঁচিকে যে কেন ঝর্নার শহর বলে তা এই হুড্রু বা হুন্ড্রু দেখার পরই বুঝতে পারবেন। হুড্রু এখান থেকে আনুমানিক ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সুন্দরী সুবর্নরেখা এখানে প্রায় ৩২০ উপর থেকে বিশাল জলরাশী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জলপ্রপাতের পাদদেশে পৌঁছানোর জন্য, 750টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামা একটি দারুন রোমাঞ্চকর অভিঙ্গতা সঙ্গে ওই অত জলের বয়ে চলার একটা আওয়াজ সত্যই অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়।
2. রক গার্ডেন – Ranchi rock garden
জয়পুর গার্ডেন সংলগ্ন, রাঁচির রক গার্ডেন হল একটি শান্ত মরূদ্যান। এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকা শিল্পকর্মগুলির সমস্ত পাথর গোন্ডা পাহাড় থেকে নেয়া। লাগোয়া কাঁকে বাঁধ সমেত যে ল্যান্ডস্কেপ তৈরি হয়েছে তা এক কথায় ভীষণ ভাল লাগবে সকলেরই। গোন্ডা পাহাড়ের পাদদেশে এর রক গার্ডেন সাথে কাঁকে বাঁধ আপনার রাঁচি ভ্রমণের স্মৃতিতে নিশ্চই বহুদিন থাকবে।
3. কাঙ্কে বা কাঁকে ড্যাম – Kanke dam
রাঁচির অন্যতম দর্শনীয় স্থান মনোহারী কাঙ্কে ড্যাম ছাড়া রাঁচি ভ্রমণ ঠিক সম্পূর্ণ হয় না। গোন্ডা পাহাড়ের আশেপাশে অবস্থিত, এই নয়নাভিরাম বাঁধ এবং এর আশেপাশের পাহাড় নিয়ে একটি চোখ জুড়ানো দৃশ্য তৈরি হয় । লাগোয়া রক গার্ডেন ও এই জায়গাটা একটি আদর্শ সপ্তাহান্তে ভ্রমণের জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। হ্যাঁ একটা কথা ন বললে অসম্পুর্ন থেকে যাবে, এই জায়গাটিতে দারুন সব রকমের স্থানীয় সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। মিস করবেন না একদম। ঠিক প্রায় সন্ধ্যাবেলা ভোজনরসিক যারা ড্যামের কাছে সুর্য্যাস্ত দেখুন সাথে স্থানীয় সুস্বাদু খাবারের মজা নিন।
4. ভগবান বিরসা বাইওলজিকাল গার্ডেন
এ রাজ্যের অন্যতম প্রধান চিড়িয়াখানা হিসেবে খ্যাত, বিরসা জুওলজিক্যাল পার্ক হল এমন একটি সুন্দর জায়গা যেখানে সপরিবারে সবাই একসঙ্গে আনন্দ করা যায়। প্রকৃতি যারা ভালবাসেন তাদের আরও বেশি ভালও লাগবে কারন প্রায় ১০৪ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত চিড়িয়াখানাটি বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী ও প্রজাতির আবাসস্থল। রাঁচির এই দর্শনীয় স্থান দুটি বিভাগে বিভক্ত, বড় এলাকাটিতে বিদেশী প্রাণী রয়েছে এর যখন ছোট অংশটি একটি বোটানিক্যাল গার্ডেনের জন্য উত্সর্গীকৃত। পার্কটিতে একটি চমত্কার গোলাপ বাগান এবং একটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে, যেখানে দর্শনার্থীরা বোটিং উপভোগ করতে পারে। এই অসাধারণ চিড়িয়াখানাটি বিরসা মুন্ডা জৈবিক উদ্যান নামেও পরিচিত।
5. দশম ফলস – Dasam falls
রাঁচি থেকে প্রায় ৩৪ কিমি দূরে অবস্থিত, দশম ফলস (বা দশম জলপ্রপাত) হল একটি নৈসর্গিক বিস্ময় যেটি সমস্ত পর্দযটকদের বিস্মিত করে। প্রায় ১৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে জল নেমে আসার সাথে, এই গর্জনকারী জলপ্রপাতটি, যা দশম গাঘ নামেও পরিচিত। দশম জলপ্রপাত বর্ষাকালে বিশেষ করে ভয়ঙ্কর রুপ ধরে ।
6. পত্রাতু ড্যাম বা লেক – Patratu lake
রাঁচি থেকে আনুমানিক ২৮ কিমি দূরে অবস্থিত পত্রাতু লেক রামগড়ের ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত একটি মনোমুগ্ধকর বাঁধ। মূলত পাত্রাতু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল সরবরাহের জন্য নির্মিত, এই বাঁধটি এখন পিকনিককারীদের কাছে একটি স্বর্গিয় দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে শীতকালে। লাগোয়া পঞ্চবাহিনি মন্দির, একটি প্রাচীন মন্দির বেশ ঘুরে ঘুরে সিড়ি দিয়ে উঠয়ার সময় চারদিক থেকে বাঁধের নিল জলের উপর বোটিং করার দৃশ্যের মনে রাখার মত।
7. জোনা ফলস Jonha falls
রাঁচি শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, জোনহা জলপ্রপাতটি দেখার মতো। একটি অসাধারন জলপ্রপাত চারপাশে ঘন বনে ঘেরা, এটি আমাদের সকলকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। প্রায় ৭০০ টি সিড়ি আপনাকে জলপ্রপাতের গোড়ায় নামিয়ে নিয়ে যাবে, যেখানে আপনি দুচোখ ভরে দেখতেই থাকবেন সেই দৃশ্য এবং এক অসাধরন ম্যাজিকার পরিবেশের মুখমুখি হবেন।
8. রাঁচি হিলস – Ranchi hills
রাঁচি শহর এই পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, এই শহরের নামও এটার জন্য, রাঁচি হ্রদ ইত্যাদি পর্যটকদের মাস্ট ভিজিট তালিকাভুক্ত। আশেপাশের পাহাড়ের বেশ একটা শান্ত ও মনোরম দেখায়। এখানকার বিস্তীর্ণ হ্রদ ও ছোট্ট পাহাড়ের দৃশ্য এমন একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি করে যে আপনার মনে হবে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকি বিশেষত সন্ধ্যার সময়। মৃদু বাতাস উপভোগ করুন এর অস্তগামী সুর্য্যের দিকে তাকিয়ে থাকুন বা লেকে একটি নৌকায় অলস ভাবে বাইতে করুন। এই আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতাই হয়তো আবার আপনেকে কোনোদিন আবার আসতে বাধ্য করবে।
9. ধ্রুব ড্যাম – Dhurwa dam
একটি সুন্দর অবকাশের স্পট যেখানে আপনি প্রিয়জনদের সাথে সুন্দর সময় কাটাতে পারেন, রাঁচি থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত ধ্রুব ড্যাম। এই নৈসর্গিক অলস স্বপনময় নির্মল পরিবেশ দর্শনার্থীদের প্রকৃতির আলিঙ্গনের মাঝে প্রাণবন্ত করে তোলে।
10. সুর্য্য মন্দির – Sun temple
রাঁচির সূর্য মন্দির একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। এই মন্দিরের অপুর্ব স্থাপত্যকর্মের জন্য বিখ্যাত। সাতটি ঘোড়া চালিত ১৮ চাকার অনন্য বৈশিষ্ট্য সহ রথ বা মন্দিরটি দেখার মতো একটি মন্দির। এটি নির্মান করেছেন সংস্কৃত বিহার দাতব্য ট্রাস্ট। এই দৃষ্টিনন্দন মন্দিরটি আশাকরি আপনাদেরও ভাল লাগবে।
11. রাঁচি ভ্রমণ: নক্ষত্র বন – Nakshatra van
ঝাড়খণ্ডের বন বিভাগ তৈরি করেছেন এটি, নক্ষত্র বন হল একটি পার্ক যা রাশিচক্রের চিহ্নগুলিকে যত্ন সহকারে সাজানো গাছের বিন্যাসের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। এটি পর্যটকের কাছে একটি জনপ্রিয় বেড়াবার জায়গা। আপনি জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনি পার্কের মনোমুগ্ধকর বাদ্যযন্ত্রের ঝর্ণা এবং প্রাণবন্ত ফুলের বাগান দেখে মুগ্ধ হবেন। যেকোনো সুন্দর ফুলের সাজান বাগান সবার জন্যই আনন্দদায়ক।
12. পঞ্চগগ জলপ্রপাত বা ফলস – Panchghagh falls
রাঁচি শহর থেকে অল্প দূরে অবস্থিত, পঞ্চগগ জলপ্রপাত স্থানীয়দের কাছে একটি পিকনিক স্পট হিসাবে বেশ জনপ্রিয়। জলপ্রপাতটির নাম হয়েছে কারণ এখান থেকে পাঁচটি জলপ্রপাত পড়তে দেখা যায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এখানে গেলে দেখতে পাবেন অনেক মানুষ এখানকার জলপ্রপাত উপভোগ করছেন। পর্যটকরা প্রায়ই জলপ্রপাতের পাদদেশে স্নান করে। পাহাড় থেকে আসা মিষ্টি জল সবসময় তাজা এবং শীতল। এখানে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে, তাই আপনি যদি বাচ্চাদের সাথে ভ্রমণ করেন তবে সতর্ক থাকুন।
রাঁচির দর্শনীয় স্থান কেবল উপরে লিখিত সূচিতেই শেষ নয়, অনেক আকর্ষণের একটি প্রবেশদ্বারও। রাঁচির শুধু সুন্দর দেখার দৃশ্য ছাড়াও এখানে দারুন স্ট্রিট ফুডও পাওয়া যায়। অসংখ্য ট্যুর অপারেটর এই মনোরম গন্তব্যগুলির সুবিধাজনক অন্বেষণের জন্য বিলাসবহুল ক্যাব অফার করে।
উপসংহার
উপসংহারে বলতে পারি, রাঁচি একটি লুকানো রত্ন যা আবিষ্কারের জন্য আপনাকে বার বার আসতে হবে। “ঝর্নার শহর” এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত সহ, এর পরিবেশ, স্থানীয় খাবার ও স্থানিয় জনগণকে জানতে হবে। তবে হুন্দ্রু জলপ্রপাত, রক গার্ডেন, কাঙ্কে ড্যাম, বিরসা জুলজিক্যাল পার্ক, দশম জলপ্রপাত, পাত্রাতু ড্যাম, জোনহা জলপ্রপাত এবং রাঁচি পাহাড় দেখার সুযোগ মিস করবেন না। তা ছাড়াও, শহরের সৌন্দর্যে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করতে এবং ধ্রুবা বাঁধ, সূর্য মন্দির, নক্ষত্র ভ্যান এবং পঞ্চগগ জলপ্রপাতের মতো অতিরিক্ত রত্ন আবিষ্কার করতে আপনার প্রতিস্রুত থাকুন। এই চিত্তাকর্ষক শহরের বিস্ময়কে সত্যিকার অর্থে উপভোগ করতে সপ্তাহব্যাপী বা তার চেয়েও বেশি আডভেঞ্চারাস ট্রিপের পরিকল্পনা করুন।
রাঁচি কাছাকাছি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন, ছুটি থাকলে দুদিন কাটাবার দারুন জায়গা।
রাচি কোথায় অবস্থিত
রাঁচি কলকাতা থেকে ৪০০ কিমি পশ্চিমে, পাটনা থেকে প্রায় ৩৪০ কিমি এবং ভুবনেশ্বর থেকে ৫১০ কিমি দুরত্বে রয়েছে। এই সবই গাড়িতে নিকটতম দুরত্ব বলা হল।
রাঁচি কি জন্য বিখ্যাত
রাঁচি ঝাড়খণ্ডের রাজধানী ছাড়াও রাঁচির আর এক নাম “ঝর্নার শহর”। এটি রাজ্যের অন্য সব ভ্রমণ গন্তব্যে যাবার কেন্দ্রবিন্দুও বটে। অর্থাৎ হিল স্টেশন বা সুন্দর জলপ্রপাত গুলিতে সহজে পৌছান যায় এখানথেকে। এখানকার হাতে তৈরি জিনিষ বা পাথর ও ধাতুর শিল্পকর্ম সলভে পাওয়া যায়।
রাঁচি ভ্রমণের সেরা সময় – Best time to visit Ranchi
রাঁচি বেড়ানোর সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এই সময় এখানকার আবহাওয়া মনোরম থাকে মানে ৩০ডিগ্রি বা তার নিচে। শুধুমাত্র গ্রীষ্ম আর বর্ষাকাল টুকু ছাড়া সারা বছর ভাল আবহাওয়া।
রাঁচি থেকে নেতারহাট দূরত্ব – Ranchi to Netarhat distance
রাঁচি স্টেশন থেকে নেতারহাটের দূরত্ব 154 কিলোমিটার ।
প্রতীক দত্তগুপ্ত, থাকেন কলকাতায়, কাজ বাদে বেড়ানোই যার প্রথম ভালবাসা। এই কয়েক বছর হল বেড়ানোর সাথে কলমও ধরেছেন । তিনি শুধুমাত্র যে জায়গাগুলি পরিদর্শন করেছেন সেগুলি সম্পর্কেই ব্লগ করেন না, তবে তিনি তার অনুগামীদের জন্য টিপস, কৌশল এবং নির্দেশিকাগুলি সম্পর্কেও পোস্ট করেন৷