পশ্চিমবঙ্গের দুর্গগুলি রাজ্যের বিভিন্ন অংশে সুন্দর স্থাপত্যের নিদর্শন হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে এবং অতীতের কাহিনী বর্ণনা করে। প্রাচীনকালে নির্মিত, এই দুর্গগুলির মধ্যে অনেকগুলি বর্তমানে ধ্বংসাবশেষে রয়েছে যেখানে তাদের অনেকগুলি এখনও তাদের স্বমহিমায় দাড়িয়ে আছে। এই দুর্গগুলি অতীতে বিভিন্ন অঞ্চলের শাসকদের তাদের প্রতিরক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য উদ্দেশ্যে কাজ করত। যাইহোক বর্তমানে তারা সবচেয়ে লোভনীয় পর্যটন গন্তব্য. পশ্চিমবঙ্গের দুর্গগুলি অনেক ঐতিহাসিক তথ্য উন্মোচন করে এবং জাতির জাতীয় ঐতিহ্যকে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করে।
আপনি যদি আনন্দনগরী, কলকাতা পরিদর্শনের পরিকল্পনা করেন, তবে হাওড়া ব্রিজ এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সহ কিছু সুস্পষ্ট আগ্রহের বিন্দু রয়েছে। কিন্তু, আপনি যদি সাধারণ জায়গা ছাড়া অন্য কিছু ঘুরে দেখার জন্য মনস্থির করে থাকেন, তাহলে কলকাতা এবং রাজ্যের অন্যন্য অংশের দর্শনীয় দুর্গের তালিকাটি আপনার জন্য।
1. ফোর্ট উইলিয়াম, কলকাতা
কলকাতা শহরের প্রায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ। ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের নামানুসারে তৈরি। বর্তমানে এটি শহরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর হিসাবে কাজ করে। ফোর্ট উইলিয়াম নিঃসন্দেহে কলকাতায় দেখার জন্য অন্যতম সেরা জায়গা।
ফোর্ট উইলিয়াম পরিদর্শন
ফোর্ট উইলিয়ামের পর্যটন নিয়ন্ত্রিত কারণ এটি একটি সক্রিয় সামরিক এলাকা। দর্শনার্থীদের জন্য ফোর্ট উইলিয়ামের প্রাঙ্গণে প্রবেশের অনুমতি নেওয়া অপরিহার্য, তবে ময়দান এবং দুর্গের আশেপাশের এলাকা এমনিতেই ঘুরে দেখা যেতে পারে। এর অষ্টভুজাকার নকশা এবং মজবুত পরিখা সহ রাজকীয় কাঠামো ইতিহাসের প্রেমিক এবং কৌতূহলী ভ্রমণকারীদের একইভাবে আকর্ষণ করে।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | কলকাতার কেন্দ্রে অবস্থিত |
অনুমতি সাপেক্ষে হেরিটেজ ওয়াকের মাধ্যমে ভিতরে যেগুলি দেখা সম্ভব:
- বিজয় স্মারক: ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব গেটের ডানদিকে অবস্থিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি রেড রোড থেকেও দেখা যায়। চীন-ভারত সংঘর্ষ এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এ শহীদ কমান্ড দের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এর উদ্দেশে 1996 সালে তৈরি হয়েছিল।
- ডালহৌসি ব্যারাক: এই সুন্দর সাদা বিল্ডিংটি 1856 সালে নির্মিত হয়েছিল, এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে তিন দিনের জন্য বন্দী হিসাবে রাখা হয়েছিল।
- সেন্ট পিটার্স চার্চ: কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ট্রিনিটি হলের বিখ্যাত চ্যাপেলের সাদৃশ্যে তৈরি করা হয়েছে সেন্ট পিটার্স চার্চ।বর্তমানে এই সেন্ট পিটার্স চার্চটিকেই ইস্টার্ন কমান্ড লাইব্রেরী হিসাবে তৈরি করা হয়েছে.
- ইস্টার্ন কমান্ড মিউজিয়াম: এই মিউজিয়ামের ভেতরে ফোর্ট উইলিয়ামের আর্কিটেকচারাল ম্যাপ,বিভিন্ন ছবি, তখনকার পতাকা, আত্মসমর্পণের বিভিন্ন ধরনের উপকরণ, ককপিটের ভাঙ্গা অংশ, বন্দুক গোলাবারুদ থেকে শুরু করে বহু ধরনের জিনিস খুব ভালোভাবে সংরক্ষিত করা হয়েছে।
ফোর্ট উইলিয়ামের প্রারম্ভিক ইতিহাস:
প্রথমে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ তৈরি হয় ১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক অধিকার রক্ষার জন্য। যে দুর্গটি আজ আমরা দেখি তা পুনরনির্মিত। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পরে স্যার রবার্ট ক্লাইভ পুরানো দুর্গটি ভেঙে ফেলে এবং পুনর্নির্মাণ করেছিলেন কারণ এটি বাংলার নবাব সিরাজ উদ-দৌলার কলকাতা অবরোধের সময় আক্রমণ সহ্য করতে পারেনি।
2. ফোর্ট মর্নিংটন, গাদিয়াড়া: পশ্চিমবঙ্গের দুর্গ
ফোর্ট মর্নিংটন হাওড়া জেলার গাদিয়াড়ায় গঙ্গা, দামোদর ও রূপনারায়ণের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। ক্লাইভ এই দুর্গে বসেই ফরাসি ও ওলন্দাজ নৌকার ওপর নজরদারি চালাতেন। বাণিজ্যের জন্য সুন্দর এই নদীপথ তাদেরও খুব পছন্দের ছিল। রাতে লাইট হাউস থেকে সার্চ লাইট ফেলেও নজর রাখা হত। তবে পরবর্তীকালে এই দুই বাহিনী ক্ষমতা হারালে ইংরেজরাও আর এই দুর্গের কদর করেনি। ১৯৪২ সালে ভয়াবহ এক সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই দুর্গ। অবশ্য নদীর তীরে ভাঙনের ফলে দুর্গের ভাঙা কিছু অংশও মাঝনদীতে বেরিয়ে আসে।
গঙ্গার বুকে উঁকি দেওয়া সেই ইতিহাসের সাক্ষী হল ফোর্ট মর্নিংটন ও লাইট হাউস। বর্তমানে শুধুমাত্র ভাটার সময় দিনে দুবার দেখা মেলে জলের তলায় তলিয়ে যাওয়া দুর্গের ভগ্নাংশ বা সুড়ঙ্গপথটুকুর। আবার জল বাড়লেই ঝুপ করে ডুবে যায়। গাদিয়াড়াকে এক অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি পক্ষ থেকে নদীর পাড়কে সাজানো হয়েছে অবশ্যই। তবে তলিয়ে যাওয়া এই ইতিহাসকে শেষরক্ষা করতে এখনও পর্যন্ত তেমনভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই জলে থেকে থেকেই হয়তো একদিন মিলিয়ে যাবে ক্লাইভের তৈরি ঐতিহাসিক এই মর্নিংটন দুর্গ।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৩৫ কিলোমিটার |
কিভাবে যাবেন ফোর্ট মর্নিংটন, গাদিয়াড়া:
- বাসে – কলকাতা বা হাওড়া থেকে এখানে আসতে, এই ঘন্টা দুয়েক লাগে। কলকাতা থেকে আসার সময় ধর্মতলা থেকে নূরপুর পর্যন্ত অনেক বাস পাবেন। বাস থেকে নেমেই খেয়া পার করে সোজা পৌঁছে যান গাদিয়ারা।
- ট্রেনে – ট্রেনে আসতে চাইলে হাওড়া স্টেশন থেকে লোকাল ধরে নামুন বাগনান স্টেশন তারপর ম্যাজিক গাড়ি বা টোটোতে করে সোজা চলে আসুন এই গাদিয়ারা।
3. ফোর্ট রেডিসন, রায়চক
রায়চকের ফোর্ট রেডিসন বর্তমানে একটি ৫ তারা হোটেলে রূপান্তরিত করায় এখন আর প্রকৃত অর্থে একটি দুর্গ নয়, তবুও এটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত এর মূল স্মৃতিস্তম্ভটি একসময় শক্তির প্রতীক ছিল। রায়চক দুর্গ, যাকে মূলত বলা হত, ব্রিটিশরা ১৭৮৩ সালে কলকাতায় নদীপথে নিয়ে যাওয়া জলদস্যুদের তাড়াতে তৈরি করেছিল। বেশ কিছ সেনা এই দুর্গে মোতায়েন থাকত পাহাড়ে।
যদিও দুর্গটির সংস্কারের ফলে তার গঠনের অনেকাংশই বর্তমানে ধরে রাখা আছে নাহলে হয়ত নিকটেই ফোর্ট মর্নিংটনের মত অস্তিত্বই নদিগর্ভে বিলীন হয়ে জেত।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৫৬ কিলোমিটার |
সপ্তাহ শেষের ছুটিতে দুদিন কাটানোর পক্ষে অতুলনীয়। কলকাতা থেকে গাড়িতে মাত্র ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট
আরও পড়ুন: কলকাতার ঐতিহাসিক গঙ্গার ঘাটগুলি জানুন
4. কুরুমবেড়া দুর্গ, পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দুরে, বেলদার খুব কাছেই রয়েছে ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী কুরুমবেড়া দুর্গ ।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়ওড়িশার রাজা কপিলেন্দ্র ১৪৩৫ থেকে ১৪৭০ এর মধ্যে নির্মাণ করেন। পরবর্তী সময়ে পাঠান, মোগল এবং মারাঠা সেনারা এই দুর্গ দখল করে এটিকে সেন্স ছাউনি হিসাবে ব্যবহার করে।
দুর্গের ভেতর একটি গগনেশ্বর নামের শিব মন্দির, সুগভীর কূপ ছিল। গবেষক ও আইনজীবী রাধানাথ পতির লেখা ‘কেশিয়াড়ি’ গ্রন্থ থেকে জানা যায় ‘এই প্রাঙ্গণের পূর্বাংশে একটি দেব মন্দিরের ভগ্নাবশেষ ও পশ্চিমে তিনটি প্রকান্ড বৃত্তাকার গম্বুজ ও চারিদিকে খিলান যুক্ত দ্বার-সহ একটি মসজিদ এখনও প্রায় অভঙ্গ অবস্থায় আছে।’ কপিলেশ্বরদেবের সময়ে তৈরি দুর্গের ভেতর মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে মহম্মদ তাহির এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১৭০ কিলোমিটার |
কাছাকাছি বেড়ানোর জন্য:
যদি ইতিহাস আপনাকে টানে তবে কাছাকাছি মোগলমারি ঘুরে আসতে পারেন। পুরাতাত্ত্বিকদের মতে, মোগলমারি পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধবিহার। নালন্দার সমসাময়িক।হিউ-এন-সাং এসেছিলেন এখানে – বেলদা থেকে নিকটেই। ঘুরে আসতে পারেন।
5. গোসানিমারি দুর্গ বা রাজপাট, কোচবিহার
কোচবিহার জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত গোসানিমারীতে পশ্চিমবঙ্গের অবশিষ্ট কয়েকটি দুর্গের মধ্যে একটি রয়েছে, যার সাথে একটি আকর্ষণীয় ইতিহাস জড়িত। স্থানীয়ভাবে এই চাপা পড়া ঢিবিকে রাজপাট বলা হয়।
ঐতিহাসিক হরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী “দ্যা কোচবিহার স্টেট অ্যান্ড ইটস ল্যান্ড রেভিনিউ সেটেলমেন্ট (1903)” অনুযায়ী, খেন রাজা নীলধ্বজই গোসানিমারীতে দুর্গ নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৭২৩ কিলোমিটার |
ইতিহাস প্রেমীদের জন্য :
বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ (1493-1519) বাংলায় তার সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষে একটি বাহিনী এই দুর্গ আক্রমণ করেন। তবে এই গোসানিমারী দুর্গ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী ও নিরাপদ। দুর্গে প্রবেশ করা সম্ভব না হলে তার বাহিনী দুর্গ ঘেরাও করে। গোসানিমারী দুর্গ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী ও নিরাপদ। দুর্গে প্রবেশ করা সম্ভব না হলেও, শেষে গ্রীক ট্রোজান হর্সের পন্থায় এক বিশ্বাস ঘাটকতায় তার পতন হয়। তারপরে বিশ্ব সিং 1515 সালে কোচ রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন।
এদিকে কালের গর্ভে গোসানিমারি দুর্গ জনশূন্য হয়ে হারিয়ে যায়। শোনা যায় 1808 সালে স্কটিশ ভূতাত্ত্বিক ডঃ ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিল্টন প্রথম মাটির ঢিবিটি পরিদর্শন করেন। 1998 এবং 2000 সালের মধ্যে, ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ দুটি খননকার্য পরিচালনা করে এবং দুর্গের দেয়াল, দুটি বড় কূপ, অনেক ভাস্কর্য এবং পাত্র আবিষ্কার করে। বেশিরভাগ প্রত্নবস্তু দুর্গের কাছে একটি জাদুঘরে রাখা আছে।
6. বক্সা দুর্গ, আলিপুরদুয়ার: buxa fort
বক্সা দুর্গ হল আলিপুরদুয়ার জেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে, বক্সা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে অবস্থিত একটি প্রাচীন দুর্গ। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এটি সিল্ক রুটকে আক্রমণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি অতীতে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র এবং কারাগারের দুর্গ হিসাবে কাজ করত।
বক্সা দুর্গ কবে তৈরি হয়েছিল তা সঠিক জানা যায় না তবে ব্রিটিশরা এই দুর্গ ১৮৬৫ সালে সিঞ্চুলার চুক্তির অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দখল করে নেওয়ার আগে এটি ছিল ভুটানের রাজা ও কোচবিহার রাজাদের যোগসূত্র। দুর্গটি আগে বাঁশের তৈরি ছিল। ব্রিটিশরা এটিকে পাথরের দুর্গে রূপান্তরিত করে। পরবর্তীকালে ১৯৩০-এর দশক অবধি দুর্গটি উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত কারাগার ও ডিটেনশন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আন্দামানের সেলুলার জেলের পর এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে কুখ্যাত ও দুর্গম কারাগার।
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৭৩৫ কিলোমিটার |
এডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য :
বক্সা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-ভুটান সীমান্তে জয়ন্তী থেকে লেপচেকা হয়ে বক্সা ফোর্ট যার গড় উচ্চতা: 660 মি থেকে 850 মি। জয়ন্তী, লজ পয়েন্ট থেকে দুর্গটি প্রায় 15 কিমি দূরে। শেষ 5 কিমি পর্যন্ত ট্রেইলের একটি সহজ ঢাল রয়েছে, যেখানে ট্রেইলটি খাড়া। ট্রেইলের ডানদিকে ভুটান। যাত্রাপথে পম্পসির শিখরটি আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
উপরিউক্ত 6 টি দুর্গ ছাড়াও আরও বেশ কিছু সংখ্যক দুর্গের অবশেষ পাওয়া গেছে যেগুলির যথেষ্ঠ বিবরণ এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। তাই আপাতত ছয়েই সমাপ্ত।
প্রতীক দত্তগুপ্ত, থাকেন কলকাতায়, কাজ বাদে বেড়ানোই যার প্রথম ভালবাসা। এই কয়েক বছর হল বেড়ানোর সাথে কলমও ধরেছেন । তিনি শুধুমাত্র যে জায়গাগুলি পরিদর্শন করেছেন সেগুলি সম্পর্কেই ব্লগ করেন না, তবে তিনি তার অনুগামীদের জন্য টিপস, কৌশল এবং নির্দেশিকাগুলি সম্পর্কেও পোস্ট করেন৷