অল্প ছুটিতে কলকাতার কাছাকাছি সেরা 7 টি ভ্রমণ গন্তব্য

কলকাতার কাছাকাছি বেড়ানোর জায়গা

কলকাতার কাছাকাছি বেড়ানোর জায়গা খোঁজা কষ্টকর হয়, যখন হাতে ছুটি যদি সত্যই খুব ছোট হয়, এই ধরুন একদিন কি জোর দু-দিন তখন কোথায় বেড়াতে যাবেন ভাবছেন তো? যদি আপনি এক বা দুই দিনের জন্য কলকাতা থেকে বাইরে যেতে ইচ্ছুক হন অথবা যদি কলকাতার কাছেই আকর্ষণীয় কিছু দেখতে চান, তবে কলকাতার খুব কাছেই রয়েছে কিছু অসাধারণ জায়গা। কলকাতার কাছেই অবস্থিত এই জায়গাগুলি তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, শিল্প, এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এই ছোট ছোট জায়গাগুলি হলো শান্তিনিকেতন, শান্ত সমুদ্র সৈকত, জাতীয় উদ্যান, শৈল শহর ইত্যাদি। এখানে আমরা ৭টি জায়গার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেই এখানে:

1. কলকাতার কাছাকাছি উইকেন্ড গন্তব্য: সুন্দরবন

সুন্দরবন

সুন্দরবন, কলকাতা থেকে প্রায় ১১০ কিমি দূরে অবস্থিত, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, আঁকাবাঁকা জলপথ এবং জলজ প্রাণীর জন্য বিখ্যাত।

কীভাবে যাবেন সুন্দরবন:

  • রেলে ভ্রমণ সবচেয়ে সুবিধাজনক। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন ক্যানিং, সুন্দরবন থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শিয়ালদহ থেকে সারাদিন ক্যানিংয়ের জন্য অনেকগুলি লোকাল ট্রেন আছে। এছাড়া নামখানা, রায়দিঘি, সোনাখালি এবং নাজাত পর্যন্ত বাসে যেতে পারে যেখান থেকে সুন্দরবনের জন্য মোটরবোট পরিষেবা পাওয়া যায়।
  • জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বার সজনেখালি, শুধুমাত্র নৌকায় যাওয়া যায়।
  • শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ক্যানিং পর্যন্ত এলে আপনার হোটেল বা ক্যাম্পের লোকজন আপনাকে ক্যানিং থেকে নিয়ে যাবে।

কী দেখবেন সুন্দরবনে:

  • বন্যপ্রাণী সাফারি: ওয়াইল্ড লাইফ বোট সাফারিতে অংশ নিয়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, কুমির এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখুন।
  • বন্যপ্রাণী সংগ্রহশালা: বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর সংগ্রহ দেখুন।
  • ওয়াচটাওয়ার: ওয়াচটাওয়ার থেকে বনভূমির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করুন।
  • কুমির এবং কচ্ছপ পালন খামার: বিভিন্ন প্রজাতির কুমির এবং কচ্ছপ দেখুন।
  • সুন্দরী গাছ: বনভূমির বিখ্যাত সুন্দরী গাছ দেখুন।
  • সজনেখালি বার্ড স্যাঙ্চুয়ারি: বিভিন্ন প্রজাতির স্থানীয় ও অতিথি পাখি দেখুন।

কিছু প্রয়োজনীয় কথা:

  • সুন্দরবন ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • আগে থেকে বুকিং করে রাখুন, বিশেষ করে ছুটির মরসুমে।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবহার করুন।
  • পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

সুন্দরবন প্রকৃতিপ্রেমী, বন্যপ্রাণীপ্রেমী এবং দুঃসাহসী পর্যটকদের জন্য একটি অসাধারণ গন্তব্য

2. কলকাতার কাছাকাছি বেড়ানোর জায়গা: শান্তিনিকেতন

ছাতিমতলা, শান্তিনিকেতন
ছাতিমতলা – শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতন, কলকাতা থেকে প্রায় 164 কিমি দূরে অবস্থিত, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিখ্যাত। একসময় ছোট্ট গ্রাম, শান্তিনিকেতন আজ কলকাতার কাছাকাছি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

শান্তিনিকেতনের আকর্ষণ:

  • বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়: মুক্ত-আকাশের নীচে শিক্ষার এক অনন্য পরিবেশের জন্য বিখ্যাত।
  • কলা ভবন: বিশ্বের অন্যতম সেরা শিল্প বিদ্যালয়, যেখানে বিখ্যাত শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।
  • উত্তরায়ণ কমপ্লেক্স: ঐতিহাসিক ভবন যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাস করতেন। এখানে একটি জাদুঘর এবং আর্ট গ্যালারিও রয়েছে।
  • উপাসনা গৃহ: চিত্রবৎ রঙিন কাচের জানালা দিয়ে সজ্জিত একটি সুন্দর প্রার্থনা স্থল।
  • বল্লভপুর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 3 কিমি দূরে অবস্থিত, বন্যপ্রাণী দেখার জন্য একটি আদর্শ জায়গা।

শান্তিনিকেতনের উৎসব:

  • বসন্ত উৎসব (মার্চ): বসন্তের আগমনী উদযাপন করা হয়।
  • জয়দেব মেলা (জানুয়ারি): কবি জয়দেবের স্মরণে आयोजিত।
  • পৌষ মেলা (ডিসেম্বর): শিল্প, হস্তশিল্প এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের এক বিরাট মেলা।

অন্যান্য আকর্ষণ:

  • ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প: বাটিক, মাটির কাজ, তাঁতের কাজ এবং সূচিশিল্পের জন্য বিখ্যাত।
  • স্থানীয় সংস্কৃতি: বাউল গান এবং নৃত্য উপভোগ করুন।

কিভাবে যাবেন শান্তিনিকেতন:

কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে ট্রেন, বাস এবং গাড়ি সহজেই পাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন শান্তিনিকেতনে:

শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন ধরণের হোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্ট হাউস রয়েছে।

কিছু দরকারি টিপস:

  • শান্তিনিকেতন ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরের নিয়ম মেনে চলুন
  • স্থানীয়দের সাথে কথা বলুন এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন। পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

শান্তিনিকেতন শিল্প, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি অসাধারণ গন্তব্য।

3. কলকাতার কাছাকাছি সমুদ্র সৈকত: বকখালি

বকখালি

বকখালি, কলকাতা থেকে প্রায় 125 কিমি দক্ষিণে অবস্থিত, পশ্চিমবঙ্গের একটি জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত শহর। এটি কলকাতার কাছাকাছি অবস্থিত সেরা পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি

বকখালীর আকর্ষণ:

  • সমুদ্র সৈকত: বকখালির বিস্তৃত বালিয়াড়ি সমুদ্র সৈকত ভারতের সবচেয়ে সুন্দর সমুদ্র সৈকতগুলির মধ্যে একটি
  • সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত: বকখালি তার অসাধারণ সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের জন্য বিখ্যাত
  • কুমির প্রজনন কেন্দ্র: দেশের সবচেয়ে বড় মোহনাভিত্তিক কুমির খামার এখানে অবস্থিত।
  • হেনরি আইল্যান্ড: বকখালি থেকে আধ ঘন্টা দূরে অবস্থিত, একটি মনোরম দ্বীপ
  • জম্বুদ্বীপ: বিভিন্ন জলজ পাখির আবাসস্থল এই অভয়ারণ্যে অবস্থিত।
  • ফ্রেজারগঞ্জের উইন্ডমিল: গগনচুম্বী উইন্ডমিলগুলি এই গ্রামের একটি দর্শনীয় আকর্ষণ

বকখালীতে অন্যান্য আকর্ষণ:

  • বোট ভ্রমণ: সমুদ্রে নৌকা ভ্রমণ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করুন।
  • মাছ ধরা: সমুদ্রে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা নিন।
  • স্থানীয় খাবার: সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার চেষ্টা করুন।
  • হস্তশিল্প: স্থানীয় হস্তশিল্প কিনুন।

কিভাবে যাবেন বকখালি:

  • কলকাতা থেকে আনুমানিক ১২৫ কিলোমিটার, রাস্তা বেশ ভাল, সড়কপথে ছোট গাড়িতে সোজা আসতে পারেন।
  • নামখানা পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা পাওয়া যায়, তারপরে বকখালি পর্যন্ত বাস অথবা ছোট গাড়িতে চলে আসুন।

কোথায় থাকবেন বকখালিতে:

বকখালিতে বিভিন্ন ধরণের হোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্ট হাউস রয়েছে।

কিছু দরকারি টিপস:

  • বকখালি ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটার সময় সতর্ক থাকুন
  • পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

বকখালি শান্ত পরিবেশ, সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য

4. কলকাতার কাছাকাছি ঘোরার ঐতিহাসিক জায়গা: বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুর, রাসমঞ্চ

বিষ্ণুপুর, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত, কলকাতা থেকে প্রায় 135 কিমি দূরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। সমৃদ্ধ ইতিহাস, নির্মাণশৈলী এবং হস্তশিল্পের জন্য বিখ্যাত, বিষ্ণুপুর টেরাকোটা মন্দির এবং মৃৎশিল্পের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

বিষ্ণুপুরের আকর্ষণ:

  • টেরাকোটা মন্দির: 17শ ও 18শ শতাব্দীতে নির্মিত, এই মন্দিরগুলি ভগবান কৃষ্ণের জীবনযাত্রা এবং হিন্দু মহাকাব্যগুলির চিত্র খোদাই করে সজ্জিত।
  • জোড়বাংলা মন্দির: 1655 সালে নির্মিত, এই মন্দিরটি একক স্তম্ভ দ্বারা সংযুক্ত দুটি পর্ণকুটির মতো দেখা যায়।
  • রাসমঞ্চ মন্দির: 1600 সালে নির্মিত, এটি ইটের তৈরি প্রাচীনতম মন্দির।
  • শ্যামরাই মন্দির: এটিতে রয়েছে কুটিরের আকারের চূড়া দিয়ে বেষ্টিত প্রসারিত পিরামিডের মত মিনার।
  • পঞ্চরত্ন মন্দির: এতে রয়েছে একটি অষ্টভুজাকৃতির কেন্দ্রীয় শিখর এবং দেওয়ালে ভগবান কৃষ্ণের জীবনযাত্রা চিত্রিত করা খোদাই করা শিল্প।

বিষ্ণুপুরের অন্যান্য আকর্ষণ:

  • মৃৎশিল্প: বিষ্ণুপুর তার মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে টেরাকোটা মূর্তি এবং পাত্র।
  • তাঁত শিল্প: বিষ্ণুপুরের তাঁতশিল্পও বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে শাড়ি এবং কাপড়ের জন্য।
  • বাজার: স্থানীয় বাজারগুলি ঘুরে টেরাকোটা মূর্তি, মৃৎশিল্পের জিনিসপত্র এবং তাঁতের কাজ কিনুন।

কিভাবে যাবেন বিষ্ণুপুরে:

  • কলকাতা থেকে বিষ্ণুপুরে বাস, ট্রেন সহজেই পাওয়া যায়। গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারেন।
  • বাস : কলকাতা থেকে সহজেই বাস ধরে বিষ্ণুপুর আসা যায়। ধর্মতলা থেকে সরাসরি সরকারি ও বেসরকারি বাস আপনাকে বিষ্ণুপুর পৌঁছে দেবে।
  • ট্রেন : ট্রেনে হাওড়া থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস, শিরোমনি এক্সপ্রেস ধরে সহজেই বিষ্ণুপুর আসা যায়, এছাড়া আপনি সাঁতরাগাছি থেকে পেয়ে যাবেন আরন্যক এক্সপ্রেস কিংবা রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস যা সহজেই আপনাকে পৌঁছে দিবে বিষ্ণুপুর শহরে ।

কোথায় থাকবেন বিষ্ণুপুরে:

  • বিষ্ণুপুরে বিভিন্ন ধরণের হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে।
  • বাজেট হোটেল থেকে শুরু করে বিলাসবহুল হোটেল পর্যন্ত সব ধরণের বিকল্প পাওয়া যায়।

কিছু দরকারি টিপস:

  • বিষ্ণুপুর ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • মন্দিরে প্রবেশের সময় পোশাক পরিধানের নিয়ম মেনে চলুন
  • স্থানীয়দের সাথে কথা বলুন এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন
  • পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

বিষ্ণুপুর ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং শিল্পে আগ্রহী পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক দুর্গগুলি কোথায় কেমন আছে

5. কলকাতার নিকটতম হিল স্টেশন: শিলিগুড়ি

শিলিগুড়ি
শিলিগুড়ি শহর

মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শিলিগুড়ি হল কলকাতার নিকটতম (প্রায় 580 কিলোমিটার) হিল স্টেশন। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার নামেও পরিচিত।

কী কী দেখবেন শিলিগুড়িতে:

  • তুষারাবৃত হিমালয়ের মনোরম দৃশ্য: শিলিগুড়ি থেকে তুষারাবৃত হিমালয়ের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
  • বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণ: শিলিগুড়িতে অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে, যেমন:
    • ISKON মন্দির: হিন্দু দেবতা শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গীকৃত একটি মন্দির।
    • সিপাই ধুরা চা বাগান: বিখ্যাত চা বাগান যেখানে চা চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ দেখা যায়।
    • মহানন্দা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: চিতা, বাঘ, হাতি, এবং বিভিন্ন পাখি দেখার সুযোগ।
    • সায়েন্স সিটি: বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রদর্শনী ও ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা।
    • করোনেশন ব্রিজ: রাণী এলিজাবেথ ও রাজা জর্জের সিংহাসনে আরোহণের স্মরণে নির্মিত।
    • সালুগারা মনাস্টারি: তিব্বতি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের দ্বারা নির্মিত, 100 ফুট উঁচু স্তূপের জন্য বিখ্যাত।
    • মধুবন পার্য: মনোরম পরিবেশে পিকনিক ও বিনোদন উপভোগের স্থান।
  • অ্যাডভেঞ্চার:
    • সান্দাকফু: পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বিন্দু, ট্রেকিং ও হিমালয়ের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগের জন্য আদর্শ।
    • দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে: 200 বছরের পুরনো, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী, দার্জিলিং পর্যন্ত ট্রেন ভ্রমণ।

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়া:

শিলিগুড়িতে কোথায় থাকবেন:

  • হোটেল: বিভিন্ন বাজেটের হোটেল পাওয়া যায়।
  • হোমস্টে: স্থানীয় সংস্কৃতি ও খাবার উপভোগ করতে চাইলে হোমস্টেতে থাকুন।

শিলিগুড়িতে কী কী খাবেন?

  • মোমো: তিব্বতি খাবার।
  • থুকপা: নুডলসের তরকারি।
  • আলুর দম: আলুর তরকারি।
  • চা: দার্জিলিং চা বিখ্যাত।

কখন যাবেন শিলিগুড়ি:

শীতকাল (অক্টোবর – মার্চ) হল শিলিগুড়ি ভ্রমণের সেরা সময়।

কিছু দরকারি টিপস:

  • হালকা শীতের পোশাক নিন
  • উচ্চতাজনিত অসুস্থতা এড়াতে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
  • দর কষাকষি করে জিনিসপত্র কিনুন।
  • স্থানীয় সংস্কৃতি ও রীতিনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখুন।

শিলিগুড়ি একটি মনোরম শহর যেখানে প্রকৃতিপ্রেমী, অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ও পরিবার সকলে একসাথে আনন্দ করতে পাড়া যায়।

6. কলকাতার কাছাকাছি একদিনে ঘুরে আসুন: ব্যারাকপুর

ব্যারাকপুর

ব্যারাকপুর, কলকাতা থেকে মাত্র 30 কিমি দূরে অবস্থিত, 1857 সালের সিপাহী বিদ্রোহের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।

ব্যারাকপুরের ঐতিহাসিক স্থান:

  • শিবশক্তি অন্নপূর্ণ মন্দির: 700 বছরের পুরনো এই কালী মন্দির ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একত্রিত হওয়ার স্থান।
  • শহীদ মঙ্গল পান্ডে উদ্যান: স্বাধীনতা সংগ্রামী মঙ্গল পান্ডের নামে নামকরণ করা এই উদ্যানটিতে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যকলাপ উপভোগ করা যায়।
  • বিজয়ান্ত মেমোরিয়াল: ব্রিটিশ স্থাপত্যের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন
  • বার্থলোমিউ চার্চ: সুন্দর গথিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত একটি গির্জা।

ব্যারাকপুরের অন্যান্য আকর্ষণ:

  • গান্ধী স্মারক সংগ্রহালয়: মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • জহরকুঞ্জ উদ্যান: নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ একটি মনোরম উদ্যান।
  • চড়ুইভাতি: গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি উঁচু জায়গা যেখান থেকে মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
  • নৌকা ভ্রমণ: গঙ্গা নদীতে নৌকা ভ্রমণ করে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করুন।

কিভাবে যাবেন ব্যারাকপুর:

কলকাতা থেকে ব্যারাকপুরে ট্রেন, বাস এবং গাড়ি সহজেই পাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন ব্যারাকপুরে:

ব্যারাকপুরে বিভিন্ন ধরণের হোটেল এবং গেস্ট হাউস রয়েছে।

কিছু দরকারি টিপস:

  • ব্যারাকপুর ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • পোশাক নিয়ম মেনে চলুন যখন আপনি ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করেন।
  • পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

ব্যারাকপুর ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অপূর্ব মিশ্রণ।

7. কলকাতার কাছেই একটুকরো ফরাসি ইতিহাস: চন্দননগর

চন্দননগর

চন্দননগর, কলকাতার উত্তরে 35 কিমি দূরে অবস্থিত, একটি ঐতিহাসিক শহর যা পূর্বতন ফরাসি উপনিবেশ ছিল।

চন্দননগরে আকর্ষণ:

  • চন্দননগর স্ট্র্যান্ড: গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত, এটি একটি জনপ্রিয় পায়ে হাঁটার পথ যা গাছপালা এবং আলো দিয়ে সজ্জিত।
  • চন্দননগর জাদুঘর: গুপ্তযুগ থেকে প্রাক-স্বাধীনতা যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং ঐতিহাসিক জিনিসপত্রের একটি বিশাল সংগ্রহ প্রদর্শন করে।
  • সেক্রেড হার্ট চার্চ: 200 বছরের পুরানো এই ফরাসি নির্মিত ক্যাথেড্রালটি চন্দননগরের স্থাপত্যের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন
  • ফরাসি সমাধিস্থল: ফরাসি স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন
  • নন্দদুলাল মন্দির এবং বিশালক্ষ্মী মন্দির: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য তীর্থস্থান
  • পাতাল বাড়ি: মাটির নীচে নির্মিত একটি অনন্য ভবন।

চন্দননগরের অন্যান্য আকর্ষণ:

  • ফরাসি খাবার: ঐতিহ্যবাহী ফরাসি খাবার উপভোগ করুন।
  • স্থানীয় বাজার: স্থানীয় হস্তশিল্প এবং স্মারক কিনুন।
  • নদী ভ্রমণ: গঙ্গা নদীতে নৌকা ভ্রমণ করুন।

কিভাবে যাবেন চন্দননগরে:

কলকাতা থেকে চন্দননগরে আসার সবথেকে ভাল হাওড়া থেকে লোকাল ট্রেন (বর্ধমান বা ব্যান্ডেল লোকাল – মেন হয়ে)।

চন্দননগরে কোথায় থাকবেন:

চন্দননগরে বিভিন্ন ধরণের হোটেল এবং গেস্ট হাউস রয়েছে।

কিছু দরকারি টিপস:

  • চন্দননগর ভ্রমণের সেরা সময় হল শীতকাল (অক্টোবর থেকে মার্চ)।
  • পোশাক নিয়ম মেনে চলুন যখন আপনি ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করেন।
  • পরিবেশের যত্ন নিন এবং কোনো আবর্জনা ফেলবেন না

চন্দননগর ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং স্থাপত্যের প্রেমীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য


Leave a Comment