সেরা 5টি প্রাকৃতিক সুইমিং পুল: শরীর, মন ও চোখ জুড়োতে চলুন

সেরা 5টি প্রাকৃতিক সুইমিং পুল

এই প্রবল গরম থেকে রেহাই পেতে সবারই মন চায় কোথাও খোলা আকাশের নিচে কোন নরম সবুজের মাঝে যেখানে একটু ঝর্ণা থাকবে বা সাথে যদি শরীর চাঙ্গা করা জলে স্নান করা বা সাঁতার কাটা যেত তবে কি ভালই না হত! হ্যাঁ সেটা কিন্তু খুবই সম্ভব কারণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে সরাসরি ঝর্নার জলে তৈরি জলাশয়ে স্নান করে নেওয়া যায়। এককথায় যাকে প্রকৃতির ‘সুইমিং পুল’ বলা যেতে পারে।

আসুন দেখে নেওয়া যাক সেরকম ৫টি মনোরম প্রাকৃতিক সুইমিং পুল যেগুলি প্রাকৃতিক ঝর্ণার জলে সৃষ্ট ও পুষ্ট এবং যেখানে স্নান করা যায়, আর সঙ্গে উপভোগ করা যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

সেরা 5 টি প্রাকৃতিক সুইমিং পুল কোনগুলি ?


1. কেম্পটি ফলস, উত্তরাখণ্ড

কেম্পটি ফলস

কেম্পটি ফলস সাড়ে চার হাজার ফুট উঁচু থেকে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে । পাহাড়ের খাতে সেই জল জমে তৈরি হয়েছে জলাশয়। উত্তরাখণ্ডের মুসৌরির কেম্পটি ফলসে স্নানের আনন্দই আলাদা। কথিত যে জন মেকিনান নামে এক ব্রিটিশ অফিসার ১৮৩৫ সালে এই বিস্ময়কর স্থানটি আবিষ্কার করেছিলেন। কেম্পটি নামের পিছনে কাহিনী হল জলপ্রপাতের কাছে ব্রিটিশ অফিসারদের দ্বারা আয়োজিত চা পার্টির কারণে ‘ক্যাম্প টি’ শব্দ থেকে এর নামটি তৈরি হয়েছিল। অসংখ্য পর্যটক এখানে আসেন এর আনন্দ নিতে । মুসৌরি থেকে ১৫ কিমি দূরে শুধু কেম্পটি জলপ্রপাত নয়, শৈল শহর মুসৌরির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মনকাড়া।

কেম্পটি ফলস দেখার সেরা সময় : বর্ষা বাদে সারা বছরই যাওয়া যায়।

2. দুধসাগর জলপ্রপাত, গোয়া

দুধসাগর জলপ্রপাত

সুবজ পাহাড়ের বুকে এই জলধারা যখন নেমে আসে দূর থেকে দেখলে মনে হয় দুধের ধারা। তার থেকেই গোয়ার এই জলপ্রপাতের নাম দুধসাগর। দুধসাগরের একেবারে গা দিয়েই গিয়েছে রেল লাইন। ট্রেনে বসে একদম কাছ থেকে দুধসগারের জলধারা উপভোগ করা যায়। আর উপভোগ করা যায় দুধসাগরের জলে অবগাহন। পাহাড়ের কোলে টলটলে জল। প্রাকৃতিক এই স্নানাগারের টানে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন পর্যটকরা। সকল ৬ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্তই থাকা যাবে ।

দুধসাগর দেখার সেরা সময় : ঠিক বর্ষা পরবর্তী অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর তবে পর্যটকদের ভিড় সারা বছর থাকে।

আরও পড়ুন: গ্রীষ্মে ঘোরার সেরা ১০টি শৈল শহর

3. ক্রাংসুরি জলপ্রপাত, মেঘালয়

ক্রাংসুরি জলপ্রপাত
Picture credit: ANKAN CCAS 4.0 via wikimedia.org

শিলং থেকে গাড়িতে ঘণ্টা তিনেক দূরত্বে পশ্চিম জয়ন্তিয়াতে রয়েছে এই অপূর্ব সলপ্রপাত ক্রাংসুরি। একটি শান্ত নদী হঠাৎ করে নেমে পড়ে একটা প্রকৃতি সৃষ্ট গুহার মুখে আর তৈরি করেছে একটা স্বচ্ছ হালকা নীল জলাধার । নদীর জলরাশি কোথাও ধাক্কা না খেয়ে এমন ভাবে নিচে পড়ে যেন গুহার সামনেটা স্বচ্ছ পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখছে । চার দিকে ঘন সবুজ পাহাড়। তার মধ্যে স্বচ্ছ জলের এই স্নানাগারে মনের আনন্দে সাঁতার কাটতে পারেন।

একটু ভাল করে দেখলে আপনার মনে হতেই পারে জঙ্গলবুক বা অন্য কোন হিন্দি সিনেমায় এই জায়গাটা দেখেছি । তবে হ্যাঁ, এখানে স্নানের সময় লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক। আর সিঁড়ি দিয়ে অনেকটা নামতে হয় প্রাকৃতিক সুইমিং পুলে যাওয়ার জন্য।

ক্রাংসুরি জলপ্রপাত দেখার সেরা সময়: ঠিক বর্ষা পরবর্তী অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর তবে পর্যটকদের ভিড় সারা বছর থাকে।

আরও পড়ুন: গরমে বেড়ানোর দারুন ৯ টি জায়গা বাছুন

4. কাকোচাং জলপ্রপাত, আসাম

কাকোচাং জলপ্রপাত

কাজিরাঙ্গার কাছে বোকাখাত থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে রয়েছে ছবির মতো সুন্দর এই জলপ্রপাত। অনেক উঁচু থেকে নেমে আসছে ঝর্না। সশব্দে আছড়ে পড়ছে নীচে। সেই জল জমা হচ্ছে পাহাড়ের মধ্যে এক জায়গায়। এই সুন্দর প্রাকৃতিক সুইমিং পুলটি স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় পিকনিক স্পটও বটে। তবে প্রবল বর্ষায় জলের পরিমাণ খুব বেশি যায় তাই তখন এখানে স্নান করাটা বিপজ্জনক হয়ে উঠে। তবে কাকোচাং বেড়াতে এলে বোকাখাতের আশেপাশে কাজিরাঙ্গার সঙ্গে নুমালিগড়ের এবং দেওপাহাড়ের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদি বেশ কিছু জায়গা ছুড়ে নেওয়া যায়।

কাকোচাং জলপ্রপাত দেখার সময় : বর্ষাকাল বাদে সারা বছর।

5. গাল্লু জলপ্রপাত – হিমাচল প্রদেশ

গাল্লু জলপ্রপাত

গাল্লু জলপ্রপাত হল হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার ধর্মশালা শহরের কাছে অবস্থিত। এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের হিমালয়ের পাদদেশের মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ দেয়, সুন্দর বনভূমি ও একটি অত্যাশ্চর্য জলপ্রপাত। যে মুহূর্ত থেকে গাল্লু জলপ্রপাত সৃষ্ট প্রাকৃতিক সুইমিং পুল দেখবেন, এর পরিষ্কার জলে আপনি সেখানে কিছু সময় সাঁতার না কেটে থাকতেই পরবেন না। যদি হতে কিছু সময় থাকে তবে কাছেই আপার ধরমকোট এলাকায় গাল্লু দেবী মন্দির বা শিব মন্দির দেখতে ভুলবেন না।

গাল্লু জলপ্রপাত দেখার সেরা সময় : জুন থেকে সেপ্টেম্বর

Leave a Comment