কলকাতার ১০ টি জনপ্রিয় রোমান্টিক স্পট, কি বিশেষত্ব

কলকাতার রোমান্টিক স্পট

কলকাতার রোমান্টিক স্পট যেগুলির পরিবেশ সত্যিই কলকাতাকে একটি প্রানবন্ত ও আনন্দের শহর করে তোলে। আসলে কলকাতা প্রেমের শহরও বটে কিন্তু আমাদের ব্যস্ত সময়সূচীর জন্য প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো দিন দিন আরও কঠিন হয়ে দাড়াচ্ছে। তাই চলুন এই শীতকালে প্রেমিক বা প্রেমিকাদের মধ্যে জনপ্রিয় কলকাতার রোমান্টিক স্পটগুলির একটা তালিকা দেখে নেওয়া যাক।

কলকাতার রোমান্টিক স্পট – সেরা ১০টি কি কি ?


1. ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
Picture credit : expedia.co.in

কলকাতার রোমান্টিক স্পট বললে সবার আগে বলতে হয় যে নামটি তা হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। রানি ভিক্টোরিয়ার সম্মানে তৈরি ঐতিহাসিক ভবন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কলকাতার গর্ব। সাদা মার্বেলের তৈরী এই অসাধারণ স্থাপত্যও কলকাতা রোমান্টিক জায়গা গুলোর মধ্যে অন্যতম। মেমোরিয়াল হলের চারপাশে সুন্দর সাজানো বাগান, নানা রকম ফুল, গাছপালা, ছোট ছোট দীঘি, ফোয়ারা, স্ট্যাচু সব মিলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল অনন্য।

বহুদূর থেকে মানুষ আসেন এই স্থাপত্যটিকে দেখতে । তবে শীতকালে এখানে স্থাপত্য দেখার থেকে মানুষ আড্ডা মারতেই আসে বেশি। বিশেষত কলেজ পড়ুয়াদের ভিড় চোখে পড়ে বেশি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। ভিতরে মিউজিয়ামের টিকিট ২০ টাকা আলাদা। সোমবার ও জাতীয় ছুটি ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৫টা থেকে বিকেল সোয়া ৬টা পর্যন্ত খোলা ভিক্টোরিয়া।

কিভাবে যাবেনকাছাকাছি মেট্রো ষ্টেশন রবীন্দ্রসদন। গড়ের মাঠ ও পিজি হসপিটালের মাঝখানে রয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
কাছাকাছি দেখুনএকেবারে হেঁটেই ঘুরে দেখে নেওয়া যেতে পারে বিড়লা প্লানেটরিয়াম, সেন্টপলস ক্যাথিড্রাল, রবীন্দ্রসদন, নন্দন

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে করণীয়:

  • লেকের চারপাশে একসাথে হাতে হাত রেখে হাঁটুন।
  • চারপাশে উদ্যানগুলিতে একটি রোমান্টিক দিন কাটান ও এই নির্মল পরিবেশের আনন্দ নিন।
  • কমপ্লেক্সের ঠিক বাইরে বিভিন্ন খাবার (স্ট্রীট ফুড) যেমন ফুচকা, ভেলপুরি, আইসক্রিম খান ।
  • প্রিয়জনের সাথে সন্ধায় লাইট এণ্ড সাউন্ড শো উপভোগ করুন।
  • একসাথে প্রচুর সেলফি তুলতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।


2. ইকো পার্ক

ইকো পার্ক
Picture credit : ecoparknewtown.com

ইকো পার্ক কলকাতার একটি অন্যতম রোমান্টিক স্পট। চিত্তবিনোদনের জন্য কলকাতার নিউ টাউনে অনেক বড় একটি জায়গা জুড়ে ইকোপার্ক তৈরি হয়েছে। ইকো পার্ক যেমন সুন্দর ঠিক তেমনই আকর্ষণীয় কলকাতার রোমান্টিক স্পট। পার্কটির মধ্যে একটি বিশাল আকারের কৃত্রিম ঝিল তৈরি করা হয়েছে। ঝিল কে কেন্দ্র করে সমগ্র পার্কটি তৈরি হয়েছে। নানা রকম স্পোর্টস থেকে পৃথিবীর সাত আশ্চর্যের রেপ্লিকা, বাচ্চাদের জন্য দোলনা স্লিপ প্রভৃতি, বোটিং সাইকেলিং এছাড়াও টয়ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে।

পার্কটির প্রধান এই ঝিলের ধারে আপনি অনায়াসে নিজের মত সময় কাটিয়ে ফেলতে পারেন। পার্কটির এন্ট্রি ফি মোটামুটি 30 টাকা থেকে শুরু ও পার্কটি খোলা থাকে সকাল 12 টা থেকে রাত আটটা অব্দি। তবে আর দেরি না করে ঘোরাঘুরি করে আসুন ইকোপার্ক থেকে। আমার বিশ্বাস এত সুন্দর একটি সুসজ্জিত জায়গা আপনাদের মন কাড়তে সক্ষম।

কিভাবে যাবেননিউটাউন, ইকো পার্ক যাবার পথগুলি এয়ারপোর্ট, উল্টোডাঙ্গা ষ্টেশন এবং চিংড়িঘাটা হয়ে যায়। এই তিনটি জায়গা থেকে ইকোপার্ক কমবেশি ১৫ থেকে ২৫ মিনিট লাগে সাধারন বাসে। গাড়িতে ১০-১৫মিনিট লাগবে।
কাছাকাছি দেখুনমাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়াম, নিক্কোপার্ক, নলবন, এয়ারক্রাফট মিউজিয়াম ও মাত্র ৩ কিমি দূরে কলকাতা স্নোপার্ক দেখতে পারেন।

ইকো পার্কে করণীয়:

  • সুন্দর ঝর্ণার জলের ধারে হাঁটুন ও এক বিস্ময়কর আনন্দ স্মৃতির সাক্ষী থাকুন
  • চা বাগান এবং মাস্ক বাগানের মধ্যে দিয়ে হাঁটুন আর অনেক ফটো তুলুন।
  • ওয়াটার স্পোর্টস যেমন কায়াকিং, বোটিং ইত্যাদি প্রিয়জনের সাথে উপভোগ করুন।
  • শিল্প কুটির থেকে কিছু সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করুন।
  • এই সমস্ত কিছুর জন্য এটিকে তরুণ প্রেমীদের কাছে কলকাতার সেরা গন্তব্য করে তুলেছে।

ইকো পার্ক সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন


3. প্রিন্সেপ ঘাট

প্রিন্সেপ ঘাট
Picture credit : kolkatatourism.travel

কলকাতার সবচেয়ে পুরনো হাওয়া খাওয়ার জায়গা বা রোমান্টিক স্পট হল প্রিন্সেপঘাট। গঙ্গার তীরের এই জায়গা থেকে স্পষ্ট দেখা যায় বিদ্যাসাগর সেতু। বাবুঘাট-আউট্রাম ঘাট পার করে চক্ররেলের রেল লাইনের পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে পৌঁছানো যায় প্রিন্সেপ ঘাটে। গঙ্গার তীরে অসাধারণ একটি জায়গা, প্রাকৃতিক শোভা উপভোগের সঙ্গে  নিজেদের মধ্যে সময় কাটানোর দারুণ জায়গা প্রিন্সেপ ঘাট। সন্ধ্যাবেলা এর সৌন্দর্য অনেক বেশি। এখানে কোনও প্রবেশ মূল্য নেই। তবে নৌকায় চড়ে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করতে গেলে কিন্তু আপনাকে কিচয় ব্যয় করতে হবে।

কিভাবে যাবেনকলকাতা দ্বিতীয় হুগলী সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতুর ঠিক নিচে, ফোর্ট উইলিয়ামের গায়েই প্রিন্সেপ ঘাট। আপনি ইডেন গার্ডেন বা আউট্রাম ঘাট থেকে হেঁটেও যাওয়া যেতে পারেন মিনিট কয়েকই পৌঁছে যাবেন।
কাছাকাছি দেখুনবিদ্যাসাগর সেতু, সুন্দরভাবে বাঁধান গঙ্গার পাড় বরাবর হাঁটুন একেবারে বাবুঘাট পর্যন্ত, সন্ধ্যে বেলায় গঙ্গা এখানে অপরুপা। ইডেন গার্ডেনস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, আলিপুর চিড়িয়াখানা এর সাথে ঘোরা যেতেই পারে।

প্রিন্সেপ ঘাটে করণীয়:

  • প্রিয় মানুষের হাত ধরে খানিকটা সময় গঙ্গার ধারে প্রিন্সেপ ঘাটে কাটাতে পারেন।
  • গঙ্গায় দুজনের স্বরনীয় নৌকা বিহার করতে পারেন।
  • গঙ্গার পাড়ে একান্তে কিছু সময় কাটাতে পারেন।
  • বিখ্যাত সার্কুলার রেলওয়েতে একটু ঘুরে নিতে পারেন।


4. রবীন্দ্র সরোবর

রবীন্দ্র সরোবর
Picture credit : touryatras.com

রবীন্দ্র সরোবর, কৃত্রিম এই জলাশয়টি কলকাতায় একান্তে প্রিয়জনের সাথে কথাবার্তা বলার জন্য আদর্শ জায়গা। রবীন্দ্র সরোবর পার্কটির দূষণমুক্ত পরিবেশ, সবুজে ঢাকা চারিদিক এটিকে কলকাতার এক অন্যতম রোমান্টিক স্পট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শীতকালে এখানে অনেক পরিযায়ী পাখি দেখতে পাওয়া যায়। ইচ্ছা হলে হ্রদের জলে বোটিংও করতে পারেন। নিভৃতে সময় কাটাতে হলে চলে আসতেই পারেন শহর থেকে দূরে এই জায়গায়।

কিভাবে যাবেনকাছাকাছি মেট্রো ষ্টেশন রবিন্দ্রসরোবর এবং কালিঘাট দুটোই। বাসে গড়িয়াহাট বা দেশপ্রিয় পার্ক নেমেও কয়েকপা হাঁটলেই রবিন্দ্রসরোবর গেট।
কাছাকাছি দেখুনদেশপ্রিয় পার্ক, লেক মল, সাউথসিটি মল একান্ত সময় কাটানোর জন্য আদর্শ।

রবীন্দ্র সরোবরে করণীয়:

  • আপনার বিশেষ জনের সাথে লেকের ধার বরাবর হাঁটুন।
  • পড়ন্ত রোদ্দুরে অফুরন্ত সেলফি বা ছবি তুলুন।
  • আপনাদের পাশে সর্বদাই দেখবেন ঝলমুড়ি, চা, ঘটিগরম যাতায়াত করছে – এগুলো নিতে ভুলবেন না।
  • দারুন ঝর্ণা আর ফাউন্টেন শো দেখতে ভুলবেন না।


5. সেন্ট্রাল পার্ক ( বনবিতান )

সেন্ট্রাল পার্ক ( বনবিতান )
Picture credit : trip.com

যেকোনো প্রিয়জন বা সঙ্গীর সাথে একান্তে সময় কাটানোর জন্য সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক হল সেরা জায়গা। এটি রোমান্টিক স্পট হিসাবে কলকাতার অত্যন্ত পছন্দের। শহুরে কোলাহলমুক্ত সল্টলেকের এক্কেবারে কেন্দ্রে এক বিশাল বনানী। কৃত্রিম হ্রদ, ডিয়ার পার্ক, নানা প্রকার পাখিদের উপস্থিতি আপনাকে প্রকৃতির অনেক কাছে নিয়ে আসে। সব বয়সের মানুষই এখানে এসে প্রাণশক্তি ফিরে পাবেন।

কিভাবে যাবেনকলকাতার নানা প্রান্ত থেকে সল্টলেকের কেন্দ্রবিন্দু অর্থাৎ করুণাময়ী আসার প্রচুর সরকারি ও বেসরকারি বাস রয়েছে । চিংড়িঘাটা বা উল্টোডাঙ্গা থেকে ২০ মিনিট এবং এয়ারপোর্ট থেকে ৪০ মিনিটের মত সময় লাগবে।
কাছাকাছি দেখুননলবন উদ্যান, নিক্কোপার্ক, ইকো পার্ক, সিটি সেন্টার-১ বা সিটি সেন্টার-২ মল, সাইন্স সিটি ঘুরে দেখতে পারেন।



6. নলবন পার্ক

নলবন পার্ক
Picture credit : VegChop CC BY SA 4.0 via wikicommons

শহরের মানুষ যাতে খোলা প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটাতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি এই নলবন। সল্টলেকের ধারেই এই নলবনের হৃদয় হল একটা বড় কৃত্রিম লেক এবং তাতে বোটিং করার ব্যবস্থা আর গাছগাছালিতে ভরা সামনে বিশাল ঝিলের শোভা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। বিধাননগর বা উল্টোডাঙা থেকে ট্যাক্সি, অটো বা বাসে পৌঁছে যাওয়া যায় নলবন পার্কে।

কলকাতার নলবন বোটিং কমপ্লেক্স, অন্যান্য চিত্তবিনোদন উদ্যানের তুলনায় একটি খুব নির্জন স্থান এবং এই জন্যই কলকাতার নলবন বোটিং কমপ্লেক্স তরুণ দম্পতিদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান যারা এখানে প্রকৃতির সৌন্দর্যের অন্বেষণে একান্তভাবে কিছু শান্ত মুহুর্ত কাটাতে চান।

কিভাবে যাবেনই এম বাইপাস বা চিংড়িঘাটা থেকে ১০মিনিটের পথ। উল্টোডাঙ্গা থেকে ৩০ মিনিট এবং এয়ারপোর্ট থেকে বাসে প্রায় ঘন্টা খানেক লেগে যায়।
কাছাকাছি দেখুনকলকাতার সবথেকে বড় পারিবারিক বিনোদন পার্ক – নিক্কোপার্ক এক্কেবারে গায়ের কাছে, তাছাড়া সেন্ট্রাল পার্ক, ইকোপার্ক এগুলোর যেকোন একটিকে চেষ্টা করতে পারেন কারন ওই পার্কগুলির প্রত্যেকটিতে একটা আস্ত দিন কাটানো যেতে পারে।

নলবন পার্কে করণীয় :

  • নলবন লেকের উপর নৌকোয় আপনার সঙ্গীর সঙ্গে রোম্যান্টিক মূহূর্ত তৈরি করুন।
  • বোট রাইডে গিয়ে গলা ছেড়ে গাইতেও পারেন।
  • যদি কবিতা বেশ পছন্দের হয় তবে পরিবেশ অনুযায়ী একটা কবিতা বলা মন্দ হবে না।


7. বোটানিক্যাল গার্ডেন

বোটানিক্যাল গার্ডেন
Picture credit : nurserytoday.co.in

বোটানিক্যাল গার্ডেন এর প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হল এক ২৫০ বছর বয়সী গাছ, যা ফাইকাস বেঙ্গলহেনসিস নামে পরিচিত। এই গাছটি প্রায় ৯৮ ফুট উঁচু এবং প্রায় ১৩০০ ফুটের এক পরিধি ঘিরে আছে- যা পর্যটকদের জন্য একটি বিরল দৃশ্য। বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। তবে ক্যামেরা নিয়ে যেতে হলে আরও ২০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই গার্ডেনের দরজা।

বোটানিক্যাল গার্ডেন একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্থান যেখানের প্রকৃতির কোলে সব বয়সের পর্যটকরা তাদের সময় উপভোগ করতে পারেন। তরুণ প্রজন্ম যাদের কাছে প্রাইভেসি বেশি কাম্য তাদের প্রিয় জায়গা হতে পারে ।

কিভাবে যাবেনদ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে গেলে সেতু পেরিয়ে ১৫ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন বাসে করে। হাওড়া ব্রিজ হয়ে গেলে বাসে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন শিবপুর বোটানিকাল গার্ডেন।
কাছাকাছি দেখুনঅবনী রিভারসাইড মল, মিলেনিয়াম পার্ক, ইডেন গার্ডেন, প্রিন্সেপঘাট।



8. মিলেনিয়াম পার্ক

মিলেনিয়াম পার্ক
Picture credit : kolkatatourism.travel

মিলেনিয়াম পার্ক, গঙ্গার ধারের এই সুন্দর পার্কে প্রিয়জনের সাথে ঘন্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়া যায়। মিলেনিয়াম পার্কের নিজস্ব শোভার থেকে আপনার মন কাড়বে গঙ্গার ধারে বসে মৃদু বাতাসে গঙ্গার নৌকা চলাচল ও সূর্যাস্ত দেখতে। মিলেনিয়াম পার্কের মার্জিত সৌন্দর্যের সাথে আরাম করে বসার জন্য অনেক বেঞ্চ রয়েছে। প্রধান উদ্যানের পাশে শিশুদের জন্য একটি স্বতন্ত্র ছোট পার্ক রয়েছে যেখানে তারা নাগরদোলা, স্লাইডস, দোলনা ইত্যাদিতে চড়তে পারে। এছাড়াও মিলেনিয়াম পার্কের ভিতরে একটি খাদ্য-সংযোগ রয়েছে যেখানে আপনি কলকাতার সুস্বাদু স্ন্যাকস এবং খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন।

যারা ছায়ার নীচে বসতে চান তাদের জন্য কুঁড়েঘরের মত ঘেরা জায়গা রয়েছে। কলকাতার মিলেনিয়াম পার্কে ঘুরতে যাওয়ার ভাল সময় হল সন্ধ্যাবেলা যখন মিলেনিয়াম পার্ককে রঙিন আলোয় দারুন দেখায়।

কিভাবে যাবেনকাছাকাছি মেট্রো ষ্টেশন হল এসপ্ল্যানেড। চক্ররেল মিলেনিয়াম পার্কের গাঘেষেই যাতায়াত করে বিবাদি বাগ স্টেশনে নামলেই
কাছাকাছি দেখুনপ্রিন্সেপ ঘাট, বাবুঘাট, ইডেন গার্ডেন, গড়ের মাঠ।

মিলেনিয়াম পার্কে করণীয়:

  • পার্কের ঘন গাছপালায় ঘিরে থাকা সরু পথ দিয়ে হেঁটে যেতে দারুন লাগবে।
  • আপনার প্রিয়জনকে উৎসর্গ করতে কবিতা বলুন / লিখুন।
  • গঙ্গার উপর সূর্যাস্তের লাল আভার ঐশ্বরিক দৃশ্য মনবন্দী করে রাখুন।
  • মিলেনিয়াম পার্কে প্রিয়জনের সাথে একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা কাটান।


9. এলিয়ট পার্ক

এলিয়ট পার্ক
Picture credit : Biswarup Ganguly – CC BY 4.0 via wikicommons

কলকাতা গড়ের মাঠের সংলগ্ন এলিয়ট পার্ক একটা সুন্দর সাজান গোছান একটা পার্ক । এই পার্কটি ছোটদের চেয়ে বড়দের কথা মাথায় রেখে গড়া । তাই এখানে অবশ্য ছোটদের চড়ার মতো তেমন কিছু নেই। আছে কৃত্রিম হ্রদ ও চারদিকে সবুজের সমারোহ। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে ইলিয়ট পার্ক। এখান থেকে টুক করে ঘুরে আসতে পারেন পাশের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।

কলকাতা রোমান্টিক যুগলদের জন্য এলিয়ট পার্ক ভাল এবং নিরাপদ জায়গা। দম্পতিরা কোনও রকম টেনশন ছাড়াই প্রিয়জনের সান্নিধ্য উপভোগ করতে পারবেন।

কিভাবে যাবেনকাছাকাছি মেট্রো হল ময়দান ষ্টেশন। কলকাতার উত্তর বা দক্ষিন যেকোন দিক থেকে বাসে ময়দান নামলেই আপনি এলিয়ট পার্কের গেটের কাছেই পৌঁছে যাবেন।
কাছাকাছি দেখুনভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, বিড়লা প্লানেটোরিয়াম, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, রবীন্দ্র সদন, নন্দন সবই একসাথে দেখতে পারেন।

এলিয়ট পার্কে করণীয়:

  • বিকালে এবং সন্ধায় দারুন রোমান্টিক সব ছবি তুলুন।
  • সুন্দর কনসার্টে যোগ দিতে পারেন।
  • কলকাতায় সবচেয়ে ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা দর্শনীয় স্থান এলিয়ট পার্ক। এই পার্ক থেকে সম্পূর্ণ আনন্দ নিন।


10. নন্দন

নন্দন
Picture credit : indiatimes.com

রবীন্দ্রসদন সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গণের একটি অংশ হল নন্দন। তবে নন্দনের তার নিজস্ব মহিমায় প্রতিষ্ঠিত। নন্দন আসলে কেবল একটা প্রেক্ষাগৃহ নয়। নন্দন মানে একটা সাংস্কৃতিক পরিবেশ। বাঙালি সংস্কৃতির উদযাপনের ক্ষেত্রে কলকাতার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতিকেন্দ্র হল নন্দন। মনের মানুষদের সঙ্গে চুটিয়ে গল্প-আড্ডা করতে চাইলে নন্দন হতে পারে একদম পারফেক্ট জায়গা।

নন্দন প্রাঙ্গণ আর তার আশেপাশের পরিবেশ অনেক খোলামেলা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দিনের বেশ কিছুটা সময় কাটানোর পক্ষে আদর্শ ।

কিভাবে যাবেনকাছাকাছি মেট্রো হল রবীন্দ্রসদন ষ্টেশন। ষ্টেশন থেকে বেরিয়েই কয়েক পা মাত্র। বাসে রবীন্দ্রসদন অথবা এক্সাইড মোড় নামলেই হল।
কাছাকাছি দেখুনভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, বিড়লা প্লানেটোরিয়াম, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, রবীন্দ্র সদন, এলয়ট পার্ক সবই একসাথে দেখতে পারেন।

নন্দনে কি করতে পারেন :

  • নন্দনে একটা উচ্চমানের সিনেমা দেখতে পারেন।
  • নন্দন-রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে বসে কিছু একান্তে সময় কাটান।
  • পাশেই আর্ট গ্যালারী, একবার যাওয়া যেতেই পারে ।

Leave a Comment