কালনা দর্শনীয় স্থান, রাজবাড়ি, ১০৮ শিব মন্দির

কালনা দর্শনীয় স্থান

কালনা পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি শহর ও কালনা মহকুমার সদর দপ্তর। কালনা তে অনেক প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক মন্দির থাকার জন্য একে “মন্দির শহর” ও বলা হয়। এখানে অষ্টাদশ শতকে নির্মিত পোড়া মাটির ১০৮ টি শিব মন্দির ছাড়াও কালনা শহরে লালজি মন্দির, সিদ্ধেশ্বরীকালী মন্দির উল্লেখযোগ্য। তবে কালনা রাজবাড়ী এবং সংলগ্ন এলাকা কালনার সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান।

কালনা বেড়াতে কিভাবে যাবেন

  • কালনা আসলে ব্যান্ডেল কাটোয়া লাইনে অবস্থিত। তাই আপনি হাওড়া ও শিয়ালদহ দুই জায়গা থেকেই ট্রেনে যেতে পারেন। কালনার রেল স্টেশনের নাম কিন্তু অম্বিকা কালনা।
  • হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে অম্বিকা কালনা যেতে প্রায় পৌনে ২ঘন্টা লাগে।
    শিয়ালদহ থেকে কাটোয়া লোকালে যেতে প্রায় সোয়া দু’ঘন্টার কাছাকাছি লাগে ।
  • অম্বিকা কালনা স্টেশন থেকে টোটো ধরুন, ভাড়া মাথা পিছু ১০টাকা, সোজা পৌছে যান ১০৮শিব মন্দির প্রাঙ্গনে।

এই মন্দির আর রাজবাড়ী কাছাকাছি এলাকার মন্দিরগুলির অসাধারন স্থাপত্য ও তার ইতিহাস একটু ভাবতে বা স্মৃতিচারণ করতেই আপনার কয়েক ঘন্টা কেটে যাবে। আর আপনি যদি সুন্দর জায়গার ছবি তুলতে পছন্দ করেন তবে আপনি পুরো দিন কাটিয়ে দিতেও পারেন। তাই হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে সকাল সকাল ট্রেন ধরুন আর সন্ধায় বাড়ি ফিরে আসুন।

কালনা শহরের ইতিহাস

বর্ধমানের রাজারা ছিলেন শিবের উপাসক। তাই কালনা জুড়ে বহু শিবমন্দির তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আর কালনাকে করে তুলেছে মন্দির শহর। আবার কালনা এক সময়ে যে তন্ত্রসাধনার পীঠস্থান ছিল তার বহু প্রমাণ পাওয়া যায়। কালনা দর্শনীয় স্থান অনেক, সমগ্র কালনা শহর জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন কালী মন্দির, যেমন সিদ্ধেশ্বরীকালী,সাধনকালীর সাধন কুঞ্জ, সিদ্ধান্ত কালী,আনন্দময়ীকালী,সত্যনাথেরকালী, কমলাকান্তের কালী,ভবাপাগলার কালী ইত্যাদি। কালনা শহরকে তাই কালী-ময় কালনা বা কালী-ক্ষেত্র কালনা বললেও হয়। “কালী” থেকেই এই শহরের নামকরণ কালনা কিনা তা নিয়ে গুঞ্জন আজও আছে। এই শহরের আরাধ্যাদেবী মা-সিদ্ধেশ্বরী। যাঁর পূর্ব নাম অম্বিকা,তাঁরই নামানুসারে এই শহরের নাম ‘অম্বিকা কালনা’ ।

কালনা দর্শনীয় স্থান সমূহ


কালনা ১০৮ শিবমন্দির

কালনা ১০৮ শিবমন্দির
Picture credit: pratyushdey.com

কালনা দর্শনীয় স্থানগুলির অন্যতম মূল আকর্ষণ ১০৮ শিব মন্দির। এই মন্দিরগুলি স্থানীয়দের কাছে নবকৈলাস মন্দির নামে হিসেবে পরিচিত।

কালনা ১০৮ শিব মন্দিরের ইতিহাস – মহারাজা তেজ চন্দ্র বাহাদুর ১৮০৯ সালে এই ১০৮ শিব মন্দির তৈরি করেন। এই ১০৮ শিব মন্দির এখন আর্ডিওলজিক্যাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়া বা ASI এর খুব ভালো তত্ত্বাবধানে রয়েছে এই মন্দিরগুলি। ভাবতেও অবাক লাগে ১৮০৯ সালে কত কম প্রযুক্তি নিয়ে এত সুন্দর কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছিল।

কালনা ১০৮ শিব মন্দিরের আর্কিটেকচার – সত্যিই অবাক করার মত আর্কিটেকচার এই ১০৮টি শিব মন্দিরের । দুইটি সমকেন্দ্রিক বৃত্তের ওপর তৈরি হয়েছে ১০৮ টি শিব মন্দির। ভিতরের বৃত্তে আছে ৩৪ টি আর বাইরের বৃত্তে আছে ৭৪ টি মন্দির। সবকটি মন্দির ই তৈরি হয়েছে আটচালা স্টাইলে। আর প্রতিটি মন্দিরে আছে একটি করে শিব লিঙ্গ। শোনা যায় এই মন্দিরের দেওয়ালে রামায়ন আর মহাভারতের গল্প লেখা আছে।

প্রথম বৃত্তের মন্দিরগুলিতে প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গ শ্বেত অথবা কষ্টি পাথরের, পরের বৃত্তের মন্দিরগুলি কেবলমাত্র শ্বেত পাথরেই নির্মিত। জপমালার প্রতীক হিসেবে মন্দিরগুলি উপস্থাপিত হয়েছে।

কালনা রাজবাড়ী ও ইতিহাস

কালনা দর্শনীয় স্থান
Picture credit: anandabazar.com

কালনা রাজবাড়ির ইতিহাস আর এই কালনা শহরের ইতিহাস একসুত্রে গাঁথা। ১৮ শতকের সময়, বর্ধমানের মহারাজারা বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত মন্দির নির্মান করেন। ওই সময়টাই ছিল কালনার ইতিহাসের সবথেকে গৌরবময় সময়। ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজকুমার প্রতাপ চন্দ্রের স্ত্রী প্যায়ারি কুমারি এই দেউল গঠন শৈলির প্রতাপেশ্বর মন্দির নির্মান করেন। আবার বর্ধমানের মহারাজ কীর্তি চাঁদের মা ব্রজকিশোরী দেবী লালজী মন্দির নির্মান করেন।টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ মন্দিরগুলির নান্দনিক মূল্য অপরিসিম। কালনা দর্শনীয় স্থান যতগুলি আছে, রাজবাড়ী তারমধ্যে অন্যতম। কালনা রাজবাড়ির এই সুবৃহৎ প্রাঙ্গণটি কোমল সবুজ ঘাস ও নিপুন পরিচর্যার ছাপ স্পষ্ট লন এবং বাগান। সুন্দর এই জায়গাটি একটি আদর্শ পর্যটন স্থল করে তুলেছে।

কালনা রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে ঢুকে বাম দিকে প্রথমে পড়বে প্রতাপেশ্বর মন্দির, রাস মঞ্চ, লালজি মন্দির তারপর ডানদিকে ঘুরলেই বাম হাতে পড়বে আরো একটা ছাদ ওয়ালা স্ট্রাকচার। একটু এগিয়েই সামনে পঞ্চরত্ন মন্দির, বিজয় বৈদ্যনাথ মন্দির আর ডান দিকে পড়বে কৃষ্ণচন্দ্রজি মন্দির।

কালনা প্রতাপেশ্বর মন্দির

কালনা প্রতাপেশ্বর মন্দির
Picture credit: Gautam Tarafder, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons

১৮৪৯ সালে এই মন্দির তৈরি হয় শিব ঠাকুরের জন্য। একটি উঁচু ভিতের ওপর বানানো হয় এই মন্দির। আকারে সব থেকে ছোটো হলেও এই মন্দিরের টেরাকোটার কাজ বোধয় সবথেকে সেরা আর তার সাথেই সব থেকে সুন্দর করে সংরক্ষিত। মন্দিরের চার দিক পোড়ামাটির অলঙ্করণে অলংকৃত যার মধ্যে আছে সীতা ও রামচন্দ্র, চৈতন্য মহাপ্রভু এবং বৈষ্ণবীদের দেব-দেবীর মূর্তি এবং প্রধান মহাকাব্যের দৃশ্যগুলির বিশেষ উপস্থাপনা। এছাড়াও এতে আছে রাম এবং রাবণের যুদ্ধের দৃশ্য, কৃষ্ণ লীলার দৃশ্য, সেইসাথে দৈনন্দিন জীবনের চিত্রগুলিকে উপস্থাপন করে সূক্ষ্মভাবে খোদাইকৃত চিত্র রয়েছে টেরাকোটা প্যানেলে। এককথায় এই মন্দিরের কারুকার্যের সৌন্দর্য্য বর্ণনাতীত।

প্রতাপেশ্বর মন্দিরের বাম দিকে একটি কামান রয়েছে, এবং আছে একটি রাস মঞ্চ, যার ছাদ দীর্ঘদিন ধরে ধসে পড়েছে এবং ডানদিকে রাজবাড়ি কমপ্লেক্সের ডান দিকে অবস্থিত।

কালনা রাস মঞ্চ

কালনা রাস মঞ্চ
Picture credit: pratyushdey.com

প্রতাপেশ্বর মন্দিরের ঠিক ডান দিকেই রয়েছে অস্টভূজাকার রাস মঞ্চ। রাস মঞ্চের ছাদ বোধয় অনেকদিন আগেই ভেঙে গেছে। এখন রাস মঞ্চের বাকি অংশ ২৪ টি পিলারের ওপর দাড়িয়ে আছে। শুভ রাস উৎসবে সাধারণ মানুষ এখানে লালজি ও মদন গোপালজির গল্প বর্ণনা করেন।

লালজি মন্দির কালনা

লালজি মন্দির কালনা
Picture credit: upogaphy via Wiki Commons

রাস মঞ্চ থেকে সামনে এগোলেই একটি দরজা পরে সেটা দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই দেখতে পাওয়া যাবে লালাজি মন্দির। ১৭৩৯ সালে তৈরি এটি এই মন্দির চত্বরের প্রাচীনতম মন্দির যা মহারাজা জগৎ রামের স্ত্রী ব্রজ কিশোরী দেবী তৈরি করেছিলেন। এই মন্দিরটি রাধা কৃষ্ণের জন্য বানানো হয়। ইট দিয়ে তৈরি এই লালজি মন্দিরটি পঞ্চবিংশতি রত্ন স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এবং মন্দিরে মোট তিনটি তলা আর ২৫ টি চুড়া আছে।

এছাড়াও মন্দিরের সামনে একটি চার চালা নাট মঞ্চ আছে। এই মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।

পঞ্চরত্ন মন্দির কালনা

পঞ্চরত্ন মন্দির কালনা
Picture credit: Gautam Tarafder, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons

লালাজি মন্দির থেকে বেরিয়েই বাম দিকে গেলে চোখে পড়বে পঞ্চরত্ন মন্দির। এই পাঁচটি আট চালা মন্দির ঊনবিংশ শতাব্দী তে তৈরি হয়। পাঁচটি মন্দিরের প্রতিটির আকৃতি অন্যটির থেকে আলাদা। এই সব কটি মন্দির ই বানানো হয় শিব ঠাকুরের জন্য।

কৃষ্ণচন্দ্রজি মন্দির

কৃষ্ণচন্দ্রজি মন্দির
Picture credit: Sumit Surai, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons

পঞ্চরত্ন মন্দির থেকে সামনে এগিয়েই ডান দিকে আছে কৃষ্ণ চন্দ্রজি মন্দির। এই মন্দিরটি তৈরি হয় ১৭৫১-৫৫ সালে। রাধা কৃষ্ণের জন্য বানানো এই কৃষ্ণচন্দ্ৰজি মন্দির আরো একটি অসাধারণ ইট দিয়ে তৈরি এই মন্দির। কৃষ্ণচন্দ্রজী মন্দির রাজবাড়ী কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় পঞ্চবিংশতি রত্ন মন্দির। লালজি মন্দিরের মতো কৃষ্ণচন্দ্রজি মন্দিরে পশুপাখি এবং ফুলের মোটিফ সমন্বিত সুন্দর কাজ করা আছে। এছাড়া এই মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি সুদর্শন একচালা।

গোটা বাংলাতে মোট ৫ টি পঞ্চবিংশতি রত্ন মন্দির আছে, তারমধ্যে ৩ টি কালনা তে, আবার সেই ৩ টি মধ্যে ২ টি আছে কালনা রাজবাড়িতে।

সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির

সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির
Picture credit: kevinstandagephotography.wordpress.com

কালনা দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম এই সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির হল কালনার প্রাচীনতম মন্দির। হাজার বছরের পুরাতন এই দেবীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু জনশ্রুতি । সিদ্ধেশ্বরী বাড়ির নিকটস্থ গঙ্গারঘাট যা অম্বুয়ারঘাট বা সিদ্ধেশ্বরী ঘাট নামে প্রসিদ্ধ। মন্দিরের ফলকে যা উল্লেখ আছে সেই অনুযায়ী ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমানের মহারাজা চিত্রসেন,অম্বুরীশ ঋষির উপাস্য দেবী মাতা অম্বিকা বা সিদ্ধেশ্বরীর মন্দির পুননির্মাণ তথা সংস্কার করান। কিন্তু জনশ্রুতি অনুসারে আরও অনেক পূর্বে, আনুমানিক ১৬০০ খৃষ্টাব্দে দেবী অম্বু বা অম্বুয়া তন্ত্রসাধক অম্বরীশের আরাধ্যা দেবী ছিলেন। অম্বরীশ মুনির নামানুসারে দেবীর নাম হয় অম্বিকা

কালনা মহিষমর্দিনী পুজা

কালনা মহিষমর্দিনী পুজা
Image source: google.com

মহিষমর্দিনী পূজা কালনার একটি ঐতিহ্যশালী পূজা এবং কালনা দর্শনীয় স্থান হিসাবে অগ্রগন্য। দুর্গা পূজোর মত চার দিন ধরে চলে এই মহিষমর্দিনী পুজো। তিথি অনুযায়ী, সপ্তমী থেকেই দূর্গা পূজার মতনই চার দিন সাড়ম্বরে পালিত হয় মায়ের বিশেষ পুজো। কালনার এই পুজোকে ঘিরে এলাকায় বসে মেলা। কালনায় এই মহিষমর্দিনী পূজোকে ঘিরে ওই চারদিন কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। কথিত আছে প্রায় আড়াইশো বছর পূর্বে ঈশ্বরী প্রসাদ নন্দী নামক একজন ব্যবসায়ী গঙ্গাস্নান সেরে উঠে আসার সময় একটি কাঠের পাটাতন গঙ্গায় ভেসে যেতে দেখেন। সেখান থেকেই পরবর্তীতে তিনি এই পুজোর প্রচলন করেন। প্রথমে এই পুজো চৈত্র মাসে হলেও পরবর্তী সময় শ্রাবণ মাসের বিশেষ তিথিতে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়।

ঘোমটা কালী মন্দির কালনা

ঘোমটা কালী মন্দির কালনা
Picture source: eisamay.com

সিদ্ধেশ্বরী মাতাকে নিয়ে একটি লৌকিক কাহিনী প্রচলিত আছে। অতীতে যোগী ও তন্ত্রসাধক এই মন্দিরের সেবাইত ভুতনাথ অধিকারীর মাতৃরূপ দর্শন করার জন্য গঙ্গাতীরে ধ্যান করতেন এবং সবার আগে ভোরে গঙ্গাস্নান করে সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দিরে প্রণাম করতেন। একদিন গঙ্গাস্নানের জন্য ঘাটে নামতেই একটি ঘোমটা পরিহিতা বধূ স্নান সেরে উঠে আসছেন। পরদিনও একই ঘটনা ঘটল।

তারপর একদিন তিনি বধূটির পিছু নিলেন। তিনি দেখলেন সেই নববধূ স্নানের পর হেঁটে সোজা সিদ্ধেশ্বরী মাতার মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করল। উনিও ঢুকলেনএবং দেখলেন যে বধূটি সেই যে মন্দিরে গেলো,আর নেমে এলোনা, শুধু আলতা পরা জলসহ পায়ের ছাপ ছাড়া, সেই পায়ের ছাপ মন্দিরের দরজার সামনে গিয়ে শেষ হয়েছে। ঠাকুরমশাইয়ের বুঝতে কিছুই বাকি রইল না। আর সেই থেকেই এই মন্দিরের দেবী “ঘোমটা কালী” নামেই পরিচিতা হন।

কালনা শহরের অনান্য দ্রষ্টব্য স্থান

ভবা পাগলার মন্দির
Picture credit: worldorgs.com

কালনা রাজবাড়ি এবং উপরোক্ত স্থানগুলি দেখা হয়ে গেলে এবার কালনা শহরের অন্যান্য দ্রষ্টব্য গুলি দেখে নিন। একটি টোটো ভাড়া করেই দেখে নিতে পারেন বেশ কয়েকটি অসাধারণ মন্দির। প্রথমেই বলব কালনা দর্শনীয় স্থান হিসাবে ভবা পাগলার মন্দির দেখতে। ১৯৫১ সালে জাপট গ্রামে এসে ভবানী মন্দির তৈরি করেছিলেন ভবা পাগলা। শুধু সাধন-ভজনই নয়, এই মন্দির ছিল তাঁর সাহিত্য চর্চার জায়গাও। প্রতি বছর মে মাসে এখানে উৎসব হয়। দূর দূরান্ত থেকে আসেন বহু বাউল, কবিয়াল ও কীর্তনের দল।

এরপর দেখে নিন কালনার মুখ্য আকর্ষণ অনন্ত বাসুদেব মন্দির। এটি আটচালা রীতিতে তৈরি প্রাচীন বাংলার শৈল্পিক কর্মের অনন্য নিদর্শন। এরপর দেখে নিন শ্যামচাঁদ বাড়ি। এই মন্দিরটি একেবারেই মিস করা উচিত হবে না। আটচালার মন্দিরের সামনেই চারচালার মণ্ডপ রয়েছে। বাঁদিকে রয়েছে দোলমঞ্চ। কালনার ডাঙাপাড়াতে এই অপরূপ সুন্দর মন্দিরটি রয়েছে। সবশেষে দেখে নিন, মহাপ্রভুর মন্দির ও শ্যামসুন্দর মন্দির। কারন এগুলি ছাড়া কালনা দর্শনীয় স্থান সম্পুর্ন হয় না।

কালনা শহরে থাকার ব্যবস্থা

সাধারনত হাওড়া বা কোলকাতার আশপাশ থেকে আসা পর্যটকদের থাকার প্রয়োজন হয় না অম্বিকা কালনায়। তবে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে অম্বিকা কালনায়।

যেমন ট্যুরিস্ট লজ (পান্থনীড়) ছাড়াও হোটেল মালক্ষী, হোটেল মা অম্বিকা, হোটেল প্রিয়দর্শিনী, মাতৃ হিন্দু হোটেল, আহার হোটেল, হোটেল শিবম ইত্যাদি আরও কিছু থাকার ব্যবস্থা। এগুলি প্রত্যেকটি কালনা রাজবাড়ির আশেপাশে অবস্থিত। এই হোটেল এবং রেস্তোরাঁগুলিতে ভাল মানের খাবার এবং বিশেষ থাকার ব্যবস্থা আছে।

আরও পড়ুন – পশ্চিমবঙ্গের ভ্রমণযোগ্য ১২টি ঐতিহাসিক স্থান

Leave a Comment