মর্গ্যান হাউস (কালিম্পং) কি সত্যই ভূতুড়ে? চলুন ঘুরে আসা যাক!

মর্গান হাউস কালিম্পংয়ের সেই বিখ্যাত বাড়িটি যেখানে মর্গান দম্পতি বাস করতেন, শোনাযায় মিসেস মর্গ্যানের আত্মা নাকি এখনও এখানে ঘোরাফেরা করে। যদিও সত্যতা প্রমাণ সাপেক্ষ।

মর্গ্যান হাউস (কালিম্পং) কি সত্যই ভূতুড়ে? চলুন ঘুরে আসা যাক!
Picture credit: timesofindia.indiatimes.com

পাহাড় মানেই গা ছমছম পরিবেশ এবং ভূতের গল্প। নিঝুম নিরালা পরিবেশে যে সমস্ত কটেজ রয়েছে, সেখানে কখনও না কখনও ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে পর্যটকদের। তেমনই একটি ঐতিহ্যময় কটেজ হলো কালিম্পং-এর মর্গ্যান হাউস। এটি পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের এক অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। মর্গ্যান হাউসটি কালিম্পং শহরের দুরপিনদাঁড়া পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। প্রায় ১৬ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই বাড়িটি একসময়কার ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের নিদর্শন। পাথর আর কাঠ দিয়ে তৈরি দোতলা এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন জর্জ মর্গ্যান, একজন ব্রিটিশ পাট ব্যবসায়ী, ১৯৩০ সালে।

স্বাধীনতার পরেও মর্গ্যান দম্পতি এদেশেই থেকে যান। কিন্তু ১৯৬০-এর গোড়ার দিকে মি. মর্গ্যান মারা যান এবং কয়েক বছর পর মিসেস মর্গ্যানও দার্জিলিং হাসপাতালের এক কোণে চিরনিদ্রায় শায়িত হন। তাঁদের কোনো উত্তরাধিকারী না থাকায় ১৯৬৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাড়িটি অধিগ্রহণ করে এবং পরে এটি পর্যটন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এতদিন পরও মর্গ্যান হাউস নিয়ে নানা গল্প ছড়ায়। স্থানীয়দের মধ্যে একটি প্রচলিত গল্প আছে—মিসেস মর্গ্যানের আত্মা নাকি এখনও এখানে ঘোরাফেরা করে! তবে তিনি কোনো ক্ষতি করার জন্য নন, বরং বাড়ির চারপাশে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, অতিথিদের ঠিকমতো যত্ন নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটা দেখতেই তিনি মাঝে মাঝে আসেন। সরকারি কর্মীরা অবশ্য এসব গল্পকে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেন। তাদের মতে, বাড়ির কাঠের মেঝে আর সিঁড়ির জন্য রাতের বেলায় হালকা আওয়াজ হওয়া স্বাভাবিক। বাড়িটি নির্জন এলাকায় অবস্থিত বলে অনেকের মনেই ভৌতিক একটা অনুভূতি জেগে ওঠে।

আরও পড়ুন: সুন্দরবন ভ্রমণ গাইড – রুট, থাকার ব্যবস্থা সহ সব তথ্য

তবে গল্প, কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম সীমারেখা রয়েছে। পর্যটকেরা যখন এখানে এসে রাতে ঝমঝম বৃষ্টির আওয়াজে ঘুমাতে যান, তখন সত্যিই এক অন্যরকম অনুভূতি হয়। মর্গ্যান হাউসের অতীত, তার পরিবেশ, আর অদ্ভুত নির্জনতা যেন মিলে মিশে এক বিশেষ আবহ তৈরি করে। রাতে কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরে তাকালে কালিম্পং ভ্যালি আর দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য মন ভরিয়ে তোলে।

স্থানীয় মানুষদের অবশ্য ভূতের গল্পে বিশ্বাস এখনও অটুট। গাড়ির ড্রাইভারদের জিজ্ঞেস করলেই শুনবেন, মিসেস মর্গ্যান এখনও এখানে বাস করেন। তবে ভয় নেই, তিনি কোনো পর্যটকের ক্ষতি করেন না। শুধু তাদের মুখোমুখি হন যারা রাতের বেলায় বাড়িতে অবৈধভাবে ঢুকে কিছু খারাপ কাজ করতে আসে।

এই রহস্যময় বাড়িতে এক রাত কাটানো এক অনন্য অভিজ্ঞতা। তবে আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক কিভাবে মর্গান হাউস বুক করবেন এবং কিভাবে যাবেন কালিম্পংয়ে তারপর পৌছুবেন রোমাঞ্চকর মর্গান হাউসে।

মর্গান হাউস বুকিং
Picture credit: Subhrajyoti07, CC BY-SA 4.0 via WikiCommons

মর্গান হাউস বুকিং কিভাবে করবো ?

মর্গ্যান হাউসের বুকিং করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশনের ওয়েবসাইট অথবা অফিসের মাধ্যমে সহজেই বুকিং করতে পারেন। নিচে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় মাধ্যমের প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলো:

  • অনলাইন বুকিং পদ্ধতি: প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান – তারপর গন্তব্য হিসাবে ‘কালিম্পং’ এবং ‘মর্গান হাউস টুরিজম প্রপার্টী’ বেছে নিন।

    জনপ্রতি থাকার খরচ প্রায় ₹১৫০০ থেকে ₹৩০০০ পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ রুম বা কটেজের জন্য খরচ কিছুটা বাড়তে পারে।
  • অফলাইন বুকিং পদ্ধতি: পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশনের অফিসগুলোতে সরাসরি গিয়ে আপনি মর্গ্যান হাউসের বুকিং করতে পারেন। আপনার সুবিধার্থে নিচে কলকাতা অফিসের ঠিকানা দেওয়া হল।

কলকাতার ট্যুরিজম অফিসের ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর:
ঠিকানা: West Bengal Tourism Centre, 3/2, B.B.D. Bag (East), Kolkata – 700001
ফোন নম্বর: +91 33 2243 6440 / +91 33 2248 8271
ইমেল: info@wbtdcl.com

1 Morgan House night
Picture credit: tripadvisor.in

কীভাবে কালিম্পং যাবেন?

কালিম্পং পৌঁছানোর জন্য আপনার কাছে বিভিন্ন ধরনের ভ্রমণ মাধ্যম আছে। কালিম্পং একটি সুন্দর পাহাড়ি শহর এবং দার্জিলিং থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আপনার ভ্রমণের শুরু যেখান থেকে হবে, তার উপর নির্ভর করে আপনি প্লেন, ট্রেন বা সড়কপথ বেছে নিতে পারেন। নিচে বিভিন্ন মাধ্যমের বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো:

1. আকাশ পথে কালিম্পং

  • নিকটতম বিমানবন্দর: কালিম্পং-এর নিকটতম বিমানবন্দর হলো বাগডোগরা বিমানবন্দর (IXB), যা কালিম্পং থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে।
  • বাগডোগরা থেকে কালিম্পং: বিমানবন্দর থেকে কালিম্পং যাওয়ার জন্য আপনি ট্যাক্সি বা শেয়ার করা গাড়ি পেতে পারেন। যাত্রাপথ প্রায় ৩ ঘণ্টার হবে, এবং আপনি হিমালয়ের অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাবেন। অনেক ট্যুরিস্ট গাড়িও থাকে যারা সরাসরি কালিম্পং নিয়ে যায়।
  • উড়ান যোগাযোগ: কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, গুয়াহাটি এবং অন্যান্য বড় শহর থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নিয়মিত ফ্লাইট রয়েছে।

2. ট্রেনে করে কালিম্পং

  • নিকটতম রেলস্টেশন: কালিম্পং-এর নিকটতম রেলস্টেশন হলো নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন (NJP), যা প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
  • রেলযোগাযোগ: কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, গুয়াহাটি এবং ভারতের অন্যান্য প্রধান শহর থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) স্টেশনে ট্রেন পাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ খুব ভালো, তাই ট্রেনে যাওয়াও একটি আরামদায়ক এবং সুবিধাজনক অপশন।
  • NJP থেকে কালিম্পং: স্টেশন থেকে কালিম্পং যাওয়ার জন্য আপনি প্রাইভেট ট্যাক্সি বা শেয়ার করা গাড়ি নিতে পারেন। যাত্রা প্রায় ৩ ঘণ্টার। বাগডোগরার মতোই, নিউ জলপাইগুড়ি থেকেও সরাসরি গাড়ি পরিষেবা পাওয়া যায়।

3. সড়কপথে কালিম্পং

সড়কপথে কলকাতা থেকে: যদি আপনি কলকাতা থেকে গাড়িতে কালিম্পং যেতে চান, তবে যাত্রাপথ প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সময় লাগবে ১৫-১৬ ঘণ্টা। তবে, সরাসরি গাড়ি ভ্রমণ অনেকটা সময় সাপেক্ষ।

  • দার্জিলিং থেকে: কালিম্পং থেকে দার্জিলিং প্রায় ৫০ কিমি দূরে। আপনি ট্যাক্সি বা শেয়ার করা গাড়ি নিয়ে সহজেই যেতে পারেন। যাত্রাপথ প্রায় ২ ঘণ্টার।
  • শিলিগুড়ি থেকে: শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং-এর দূরত্ব প্রায় ৬৭ কিলোমিটার। সেখান থেকে প্রাইভেট ট্যাক্সি বা শেয়ার করা জিপে করে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যায়।
  • গাড়ি/বাস পরিষেবা: শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং-এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা আছে। শেয়ার করা জিপ বা ট্যাক্সিও পাওয়া যায়। সিলিগুড়ির বাস টার্মিনাস থেকে সহজেই বাস পাওয়া যায়।
1 morgan house room
Picture credit: Subhrajyoti07, CC BY-SA 4.0 via WikiCommons

মর্গান হাউস বা কালিম্পংয়ের আশেপাশের দর্শনীয় স্থান:

কালিম্পং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। নিচে কালিম্পং-এর কিছু প্রধান দর্শনীয় স্থান উল্লেখ করা হলো:

১. দুরপিন মনাস্ট্রি (জং ডোগ পালরি ফো ব্রাং মনাস্ট্রি):

  • কালিম্পং-এর অন্যতম বিখ্যাত বৌদ্ধ মঠ। এই মনাস্ট্রি থেকে আপনি চারপাশের সুন্দর পাহাড় এবং তিস্তা নদীর দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। দুরপিন মনাস্ট্রি দালাই লামার আশীর্বাদপ্রাপ্ত এবং এখানকার স্থাপত্য শিল্প মনোমুগ্ধকর।
  • মনাস্ট্রির উপরের অংশ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়।

২. দুরপিনদাঁড়া ভিউ পয়েন্ট:

  • কালিম্পং-এর সবচেয়ে সুন্দর ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে তিস্তা নদীর উপত্যকা, কাঞ্চনজঙ্ঘার শৃঙ্গ, এবং পূর্ব সিকিমের পাহাড়ের অসাধারণ দৃশ্য দেখতে পাবেন। এটি কালিম্পং শহরের সবচেয়ে উঁচু জায়গাগুলির একটি।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় ১২টি রাজবাড়ী কোথায়, কিভাবে যাবেন সহ সব তথ্য

৩. ডেলো হিল:

  • কালিম্পং-এর অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে অনেক রিসোর্ট এবং পার্ক রয়েছে, যেখানে আপনি প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারবেন। ডেলো পাহাড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা, তিস্তা নদী এবং কালিম্পং শহরের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
  • ডেলো হিলে আপনি প্যারাগ্লাইডিংও করতে পারেন, যা একটি অন্যতম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।

৪. ক্যকটাস নার্সারি এবং ফুলের বাগান:

  • কালিম্পং তার নানা ধরনের ক্যাকটাস এবং অর্কিড ফুলের জন্য বিখ্যাত। এখানে একাধিক নার্সারি রয়েছে যেখানে দুর্লভ প্রজাতির ক্যাকটাস এবং ফুল দেখতে পারবেন। কালিম্পং-এর মৃদু আবহাওয়া ফুল ও গাছপালা চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
  • বিশিষ্ট নার্সারি হলো: পাইনভিউ নার্সারি, যা তার ক্যাকটাস এবং সুদৃশ্য অর্কিডের জন্য প্রসিদ্ধ।

৫. তিস্তা নদীর রাফটিং:

  • তিস্তা নদীর মনোরম দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি রিভার রাফটিংয়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাও নিতে পারবেন। কালিম্পং-এর তিস্তা বাজার এলাকা থেকে রাফটিং শুরু হয় এবং এটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়।

৬. থংসা গোম্পা (থর্নবু গোম্পা):

  • এটি কালিম্পং-এর প্রাচীনতম বৌদ্ধ মঠ, যা ১৬৯২ সালে তৈরি হয়েছিল। এই থংসা গোম্পা প্রাচীন তিব্বতি স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এবং এখানকার পরিবেশ খুবই শান্তিপূর্ণ।

৭. হ্যানডিক হ্যানডিক সেন্ট মেরি চার্চ:

  • কালিম্পং-এর একটি পুরনো ক্যাথলিক চার্চ, যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের এক অনন্য উদাহরণ। কালিম্পং-এর উচ্চভূমিতে অবস্থিত এই চার্চটি খুবই মনোরম এবং দর্শনীয়।

৮. কালিম্পং সায়েন্স সেন্টার:

  • এটি শিশু এবং পরিবারের জন্য একটি মজাদার জায়গা। সায়েন্স সেন্টারে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনী, ইনস্টলেশন এবং ইন্টারেক্টিভ প্রোগ্রাম রয়েছে যা শিশুদের শিক্ষা এবং বিনোদন দেয়।

৯. পেডং গ্রাম:

  • কালিম্পং থেকে ২০ কিমি দূরে অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামটি ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ১৮৩৭ সালে নির্মিত পেডং মনাস্ট্রি রয়েছে এবং আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের নিসর্গ দৃশ্যও মনোমুগ্ধকর।

১০. নেপালি কালচারাল সেন্টার:

  • কালিম্পং অঞ্চলে নেপালি সংস্কৃতির একটি গভীর প্রভাব রয়েছে। এখানে আপনি নেপালি সংস্কৃতি, সংগীত, এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।

১১. শান্তিনিকেতন ভিউ পয়েন্ট:

  • কালিম্পং শহরের থেকে একটু দূরে অবস্থিত এই ভিউ পয়েন্ট থেকে পুরো কালিম্পং উপত্যকার অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। এটি একটি ফটোজেনিক স্থান এবং প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য আদর্শ।

১২. লেপচা মিউজিয়াম:

  • কালিম্পং-এ অবস্থিত লেপচা মিউজিয়াম লেপচা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি প্রদর্শন করে। এই মিউজিয়ামে লেপচা সম্প্রদায়ের পোশাক, অস্ত্র, এবং বিভিন্ন প্রাচীন সামগ্রী সংরক্ষিত আছে।

Leave a Comment